ভালোবাসার পদাবলিঃ ও প্রেম ও ভালোবাসা
——- আরিফুর রহমান
১. ভালোবাসা
কতকাল ধরে অপেক্ষা
কতকাল ধরে পথ চেয়ে আছি
কতকাল ধরে ডাকছি, ডাকছি তোমাকেই
কত কত নাম ধরে- যেন হারানো নাম!
মানুষের জীবন যদিও কতগুলো বিচ্ছিন্নতার যোগফল-
মনে হয় আমার; আয়ুস্কালে তার
কেবল ক্ষয়
কেবলই বিয়োগ
কেবলই বিচ্ছেদ;
আর মনের কোণে জমতে থাকে
হারিয়ে যাওয়া নামের ভিড়! তবুও-
কোনো কোনো নাম রয়ে যায় মনে
হয়তো গোপনে
অতিক্রম করে নিজের আয়ুস্কাল!
অচেনা কোনো গাছের শরীরে লেখা
সে-ই নাম এবং সেইসব নাম ধরে
কতকাল ডাকছি, ডাকছি তোমাকেই; ভালোবাসা!
২. অসম্পূর্ণ প্রেম
এ পথের ধুলো তাকে চেনে
এ পথের ঘাস বুক পেতে দেয় তার পায়ে!
এ পথেই তার রোজকার যাওয়া-আসা
দু’এক পা এগিয়ে দিতে দিতে
দু’ একটা পঙক্তি হয়েছে লেখা, তারপর আরো…
ক্রমেই এ পথের ওই পথে মিলে যাওয়া
ক্রমশ দু’মনের মোহনা খুঁজে নেওয়া
রোদে বৃষ্টিতে একটাই খোলা ছাতা,
গল্পে কথায় দু’জনে দোলানো মাথা
একই রকম; একসাথে বয়ে চলা হাসি-খুশি মান-অভিমান।
এইভাবে একদিন লেখাটি সম্পূর্ণ হয়।
রোদ ছুঁয়ে যায়
পাখি উড়ে যায় গান গেয়ে
নদী বয়ে যায়
মেঘ ভেঙে যায় বৃষ্টি নামে ধেয়ে
তারপর নামে আঁধার
অমাবস্যার ঘোর অন্ধকার!
মেঘ চমকানো আলোয় দেখা যায়
ছেঁড়া পাতাটির আধখানা হাতে এক ছেলে
ব্যাকুল হয়ে অন্য টুকরো হাতড়ায়!
৩. মুক্তির তৃষ্ণা
অচল পয়সার মতো বাক্সবন্দী হবো ভাবিনি
আশা ছিল, সবুজে ভরাবো মন, বসত বাড়ি
জানালায় দেখবো ছবি রোদ-ছায়া, পাখির উড়াউড়ি
হাওয়ায় খুঁজবো সুর, সুগন্ধী শব্দ-বাগান!
বুকেরই অন্ত্যমিলে তারে করে দেবো ভালবাসার গান!
পুড়েছে সে বসত বাড়ি লকলকে সর্পিল আগুনে,
ধুঁকছে সুখের পাখি বন্দী দশায় ‘ক্ষণ গুণে গুণে
তাতে কি, নটী-বারাঙ্গনাকে বলেছি দেবে খুলে তালা
এই মুক্তির প্রতিদানে তার বেহেস্ত সু-নিশ্চিত!
স্রষ্টা গড়ে দিয়েছে বুকে অসীম ধৈর্যের হিমশালা
কষ্ট জমিয়ে তাতে নামাবো ওম তৃষ্ণার বুড়ি-শীত!
আবার নামবো পথে, ধুলোয় রাখবো পা জোড়া খালি
ধুলি ও চরণে উঠবে সুর, বাজবে লক্ষ করতালি।