Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌ দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাঠকরা অমর একুশে বইমেলায় আসছেন। মেলার মেয়াদ ১৭ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধির কারণে বইপ্রেমীদের আনাগোনা দিন দিন বাড়ছে। কেউ আসছেন পরিবারের সঙ্গে, শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে। আবার অনেকে দলবেঁধে নিজস্ব বা এলাকার পাঠাগারের জন্য বই সংগ্রহ করছেন।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্টলের সামনে বুধবার দেখা মিলল একদল স্কুল শিক্ষার্থীর। প্রিয় শিক্ষক সাধন কুমারের সঙ্গে তারা মেলায় এসেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষককে জিজ্ঞেস করছিলেন তারা কী বই কিনবে? শিক্ষক তাদের কিছু বইয়ের জন্য উৎসাহিত করলেন। এর মধ্যে তারাশঙ্করের ‘কবি’, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঘরে-বাইরে’, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়ের ‘পল্লীসমাজ’, সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইগুলো কেনার পরামর্শ দেন তিনি।

কয়েকজন ছাত্র সেখান থেকে একেকজন একেকটা করে বই কিনে নেয়। টাঙ্গাইল থেকে আসা শিক্ষক সাধন কুমার  বলেন, আমরা একটু পরই আবার ফিরে যাব। শুধু বইমেলা দেখাতে এবং বইয়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা সৃষ্টি করতে তাদের মেলায় নিয়ে এসেছি। তাদের কাছে এখন খুব বেশি টাকা নেই, থাকার কথাও নয়। তাই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে তুলনামূলক কম দামে কিছু বই কিনতে পেরেছে।

ঠাকুরগাঁও থেকে রবিন ও আজহার এসেছিলেন তাদের পাঠাগারের জন্য বই কিনতে। তারা দুজনই বললেন, প্রতিবছরই পাঠাগারের জন্য বই সংগ্রহ করি। কিন্তু গত দুই বছর করোনার কারণে আসতে পারিনি। এই সময়ে জমে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বইয়ের তালিকার সঙ্গে এবারের মেলার কিছু বই কিনতে এলাম। আগামী দুই দিন বইগুলো সংগ্রহ করব।

ঢাকার পাশের মুন্সীগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে এসেছিলেন শাহনেওয়াজ ফারুক। মেলায় ঘুরে ঘুরে বেশ কিছু বই কিনেছেন। তিনি বলেন, আসলে যোগাযোগ ব্যবস্থা তুলনামূলক ভালো থাকার কারণে এখন ঢাকার আশপাশের অনেকে জেলা থেকেই আমাদের মতো অনেকে এসে দিনে দিনেই আবার বাড়ি ফিরতে পারছি। বইমেলায় প্রতিবছর অন্তত একবার আসা হয়-ই। না এলে মনে হয় এবার কী যেন একটা বাকি রয়ে গেছে।

মেলায় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে ক্লাউড সার্ভিস দিচ্ছে হুয়াওয়ে : আইসিটি প্রযুক্তি, সেবা ও অবকাঠামো প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে ভার্চুয়াল অমর একুশে বইমেলা চালু করার জন্য বাংলা একাডেমিকে ক্লাউড সল্যুশন প্রদান করছে। এখন থেকে বইপ্রেমীরা বইমেলা সম্পর্কিত সব তথ্য দেখতে পারবেন এই ওয়েবসাইটে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন ভেন্যুতে এ সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ওয়েবসাইটটির জন্য ক্লাউড সাপোর্ট দিচ্ছে হুয়াওয়ে আর ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমটি পরিচালনা করবে সিইএমএস। বইমেলা, স্টল, বই, অনুষ্ঠান, কার্যক্রম এবং স্টলগুলোর অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেন www.amarekusheyboimela.gov.bd ওয়েবসাইটে।

মঞ্চের আয়োজন : বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ : রশীদ হায়দার ও ফরহাদ খান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোজাফ্ফর হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন ইমতিয়ার শামীম এবং মনি হায়দার। সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারা সৈয়দ হক। তিনি বলেন, সৃজনশীল ও মননশীল লেখক রশীদ হায়দার ও ফরহাদ খানের সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্ম আমাদের সাহিত্য ও জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা ভাষা ও দেশের প্রতি তাদের গভীর অনুরাগ নতুন প্রজন্মের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুদৃঢ় করবে। এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন ইসহাক খান ও মাসুম রেজা। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুর সুধা সংগীতায়ন’-এর শিল্পীদের পরিবেশনা।

নতুন বই : মেলায় এদিন নতুন বই এসেছে ১১৪টি। এর মধ্যে সময় প্রকাশ করেছে মোস্তাফা জব্বারের ‘বাংলা ভাষার ডিজিটাল যাত্রা’, আলোঘর থেকে আন্দালিব রাশদী রচনা ও অনুবাদে ‘একাত্তরের দলিল ৩’, কথাপ্রকাশ থেকে হরিশংকর জলদাসের ‘দুর্যোধন’, শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে নাসির আহমেদের অনুলিখন ও মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাকের সম্পাদনায় ‘১৯৭১ : সাত ভাইয়ের স্বাধীনতা সংগ্রাম’।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০৩ মার্চ  ২০২২ /এমএম


Array