আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: অল্প সময়ের ব্যবধানে চির ঘুমে চলে গেলেন সঙ্গীতের তিন কিংবদন্তী লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও বাপ্পি লাহিড়ি।বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষার গানে তাঁরা ছিলেন কিংবদন্তী। তাদের একেকজনের মৃত্যু যেন একেকটি অধ্যায়ের সমাপ্তি। তাদের মৃত্যুর খবরে সারা বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অনেকদিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে সন্ধ্যা বলেছিলেন, তাঁর ও লতার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা। ১৯৫০ সালে তৎকালীন বম্বে পাড়ি দিয়েছিলেন সন্ধ্যা। ১৭ টি হিন্দি ফিল্মে তিনি প্লে-ব্যাক করেছিলেন। শচীন দেববর্মনের হাত ধরেই বম্বে এলেও প্রথম প্লে-ব্যাক করেন অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘তারানা’ ফিল্মে। এই ফিল্মে গান গাইতে গিয়ে সন্ধ্যার সঙ্গে পরিচয় হয় লতার। লতা ও সন্ধ্যা ডুয়েট গেয়েছিলেন ‘তু বোল পাপিহে বোল’। কিন্তু এই গানের সূত্রে সন্ধ্যা ও লতার বন্ধুত্বের সূত্রপাত। লতা জীবনদ্দশায় ৩৬ ভাষায় ৩০০০০ উপরে গান গেয়েছিলেন।
তাঁদের মৃত্যুতে কানাডা প্রবাসী সুধীজন শোক, শ্রদ্ধা ও গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।এক শোক বার্তায় কানাডার “নতুনদেশ” পত্রিকার প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, বিনম্র শ্রদ্ধা এ সকল কিংবদন্তি শিল্পীদের জন্য। কোভিড-১৯ আমাদের অনেক গুণীজনকে কেড়ে নিয়েছে। একের পর এক গুনিজনের মৃত্যুর সংবাদ আমাদের শুনতে হচ্ছে। তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বিশিষ্ট রম্য লেখক বায়েজিদ গালিব বলেন যাদের সঙ্গীত শুনতে শুনতেই বড় হয়েছি, তাঁদের চলে যাওয়াকে মানতে কষ্ট হয়, তবুও পরপারে খুব কম সময়ে একসাথেই চলে গেলেন। সঙ্গীত জগতে তাদের অবদান সাগর সমান। তাঁদের গান বংশ পরম্পরায় টিকে থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। তাঁদের চির নিদ্রা শান্তির হোক।
বাংলাদেশ ক্যানাডা এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি মোহাম্মদ রশীদ রিপন বলেন, আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের প্রিয় মানুষগুলিকে। মানুষের মৃত্যু অবধারিত, তারপরও বুকে শুন্যতার সৃষ্টি হয়। তাঁদের মৃত্যুতে আমি শোকাহত।এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ডঃ মোহাম্মদ বাতেন বলেন, সুরের ভুবনের এই তারকাদের চলে যাওয়া সঙ্গীত জগতে শুন্যতার সৃষ্টি হলো। তাঁদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।সিলেট এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি রুপক দত্ত বিশ্ব বরেণ্য এই তিন কৃতি শিল্পীর চির বিদায়ে গভীর শোক প্রকাশের পাশাপাশি বলেন, তাঁদের সৃষ্টি কে শ্রদ্ধার সংগে লালন মাধ্যমেই তাঁদের বিদেহী আত্মার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন সম্ভব।
কলামিস্ট ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মোঃ মাহমুদ হাসান বলেন, কিংবদন্তীতুল্য তিন সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সম্রাজ্ঞী। সুরে আর রচনায় বাংলাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে তাঁরা যে অবদান রেখেছেন, এটি যেমন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়, পাশাপাশি বাঙালির সামাজিক ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তাদের শৈল্পিক অনুপ্রেরণা ছিল আরও বেশী মহীয়ান। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এসো’ গানের মাধ্যমে তো আমাদের ইতিহাসের ই অংশ হয়ে আছেন। এই দুই গুণী শিল্পী প্রয়াত হলেও ভারত বর্ষের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক জাগরণের ইতিহাসে তাঁরা অমর হয়ে থাকবেন।
বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও সাবেক ছাত্রনেতা কিরন বনিক শংকর বলেন, এ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত তারকার প্রস্থান, সুর জগতে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতই। তাঁরা যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন। তাঁদের মৃত্যুতে তিনি শোকাহত।কানাডার আলবার্টার প্রথম অনলাইন পোর্টাল প্রবাস বাংলা ভয়েস এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল বলেন-মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। আমাদের মানতেই হবে। তাঁরা তাঁদের কর্মের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকবেন। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ /এমএম






