Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: সাধারণত বইমেলার শেষ পনেরো দিন বেশি বই বিক্রি হয়। তবে তার কয়েকদিন আগেই বই বিক্রি প্রক্রিয়া শুরু হয়। এবারও হয়তো তার ব্যতিক্রম হবে না। মেলার দশম দিনে এসে মেলায় বইয়ের বিক্রি মন্দ নয়। প্রকাশকরা বলছেন, মেলার আসছে দিনগুলোতে বইয়ের বিক্রি বাড়বে। তবে বই বিক্রির হিড়িক পড়ে যাবে এমনটা এবার কেউ-ই মনে করেন না। করোনা পরিস্থিতির বিবেচনায় বিক্রির এই নতুন ধারাকেই মেনে নিয়েছেন তারা।

অন্বেষা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে সৃজনশীল বইয়ের সামগ্রিক বিক্রি কমেছে। তবে সামনের দিনগুলোতে বিক্রি আস্তে আস্তে বাড়বে। সেটা হয়তো বই বিক্রির ক্ষেত্রে বিশাল কোনো রেকর্ড হবে না। কিন্তু প্রকাশকরা এটিকে মেনেই নিয়েই মেলা করতে এসেছেন।

মেলায় শনিবার সকালে লোকসমাগম কম থাকলেও বিকালে ঠিকই পাঠকরা এসেছেন। স্টল থেকে প্যাভিলিয়নে তারা খুঁজেছেন প্রিয় লেখকের পছন্দের বইটি। বিভিন্ন প্রকাশনীর বিপনণকর্মীরাও কাটিয়েছেন ব্যস্ত সময়। এদিন বিকাল সময় প্রকাশের সামনে দাঁড়িয়ে পাঠকদের অটোগ্রাফ দেন জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হক। সময় থেকে এসেছে তার নেওয়া মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকারনির্ভর গ্রন্থ ‘সুবেদার ওহাব আব্বা বলে কাঁদেন’।

মূলমঞ্চের আয়োজন : বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জালাল ফিরোজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাব্বির আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন মো. মইনুল কবির।

প্রাবন্ধিক ড. জালাল ফিরোজ বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের মূলনীতি কী হবে তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদে ভাষণে উল্লেখ করেন। তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও অভিজ্ঞতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের ফলে বাংলাদেশের মানুষের চেতনাজগতে যে পরিবর্তন ঘটে তা প্রতিফলিত হয় সংবিধানের মূলনীতিতে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর তার আদর্শের মর্মমূলে আঘাত করার জন্য সংবিধানের মূলনীতিতে প্রথম আঘাত করা হয়।

আলোচক সাব্বির আহমেদ বলেন, আমরা জানি সংবিধান একটি জাতির আত্মজীবনীস্বরূপ। একটি রাষ্ট্রের ভেতরকার ক্ষমতার সম্পর্ক কেমন হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকে সংবিধানে। আমাদের সংবিধানের মূলনীতিগুলো আকস্মিক কোনো বিষয় ছিল না। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই বাংলার মানুষের জন্য যে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রগঠনের সংগ্রাম করেছেন, তার পরিণতি ছিল ১৯৭২-এর সংবিধান।

সভাপতির বক্তব্যে মো. মইনুল কবির বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র অভ্যুদয়ের খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান পেয়েছি। বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণের পরম অভিপ্রায়ের প্রকাশকে মূল্য দেওয়া হয়েছে। এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন সাইম রানা, আহমাদ মোস্তফা কামাল এবং সাইফুল ভূঁইয়া।

নতুন বই : বইমেলায় গত দশ দিনে মোট বই প্রকাশিত হয়েছে ১ হাজার ২৫৯টি। আর শনিবার নতুন বই এসেছে ১৭৫টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে- আগামী প্রকাশনী এনেছে হাসনাত আবদুল হাই ও সিরাজুল ইসলাম মুনির সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু শতবর্ষে শতগল্প’, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, মোনায়েম সরকার ও সৈয়দ জাহিদ হাসান সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শত প্রবন্ধ’, ময়ূরপঙ্খি এনেছে মঞ্জু সরকারের ‘দাদুর হাতে জাদুর লাঠি’, কথাপ্রকাশ এনেছে মুস্তাফিজ শফি সম্পাদিত ‘ভাষণ অথবা একটি কবিতার গল্প’, হাওলাদার প্রকাশনী এনেছে জিয়া হাশানের ‘সময়ের দূতাবাস’, পাঞ্জেরী পাবলিকশেন্স এনেছে মোজাফফর হোসেনের ‘মানুষের মাংসের রেস্তোরা’, শিমু গ্রন্থকুটির এনেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘তিলে নেত্র চারে বেদ’, পাঠক সমাবেশ এনেছে হরিশংকর জলদাসের ‘প্রান্তজনের গল্প’, মূর্ধণ্য থেকে ভূপেন হাজারিকার ‘আমি এক যাযাবর’, সরকার আমিনের ‘মৃদ্যু বেদনার হাসপাতালে’, বিভাস এনেছে খালেক বিন জয়েনউদদীন সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু এবং রক্তাক্ত বাংলা-২’, সমগ্র প্রকাশন এনেছে ইমতিয়ার শামীমের ‘ডানাকাটা হিমের ভেতর’ প্রভৃতি।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ৩০ মার্চ ২০২১ /এমএম


Array