Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::  মানুষের চিন্তাধারাকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম বই। মানুষ তার মনের ভাব, অনুভূতি, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, স্মৃতিময় অভিজ্ঞতার বিবরণ বইয়ের মাধ্যমে সংরক্ষণ করে।

বই হচ্ছে মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, যার সঙ্গে পার্থিব কোনো সম্পদের তুলনা চলে না। পার্থিব জীবনের সম্পদগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু বইয়ের অর্জিত সম্পদ ধ্বংস হয় না; বরং ভবিষ্যৎ জীবনে উন্নতি ঘটানোর মাধ্যম হিসাবে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বই হলো সংস্কৃতি, সভ্যতা ও যোগাযোগের অন্যতম বাহন। বই এক শতাব্দী থেকে অন্য শতাব্দীতে জ্ঞানকে বহন করে নিয়ে যায়।

বইপড়ার মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত হয়। ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। আমাদের কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি করতে বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কল্পনাগুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে বাস্তবে রূপায়িত করা যায় কীভাবে-সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যায় বইয়ের মাধ্যমে। বইপড়ার মধ্যদিয়ে লেখনীশক্তিও বৃদ্ধি করা সম্ভব। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ তরুণ।

তাদের নিয়ে আমাদের শত শত স্বপ্ন আর প্রত্যাশা। আর তরুণদের মনকে উজ্জীবিত করার অন্যতম মাধ্যম হলো বই। বইপড়ার মধ্যদিয়ে তরুণরা দেশ সম্পর্কে জানবে, দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে, দেশ স্বাধীন করতে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের সম্পর্কে জানবে। আর সেই জানার মধ্যদিয়ে তরুণরা দেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিজেদের গড়ে তুলবে।

এত কিছু সত্ত্বেও আমরা বইয়ের কতটা মূল্যায়ন করছি, সে প্রশ্ন থেকে যায়। এক সময় আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার হিসাবে বিভিন্ন ধরনের বই উপহার দেওয়া হতো। সেই সংস্কৃতি আজ নেই বললেই চলে। বর্তমানে তার জায়গা দখল করে নিয়েছে নানা ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। পুরস্কার বা উপহার হিসাবে বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাওয়ার পেছনে অনেক কারণই রয়েছে।

বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে বইয়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে ফেসবুক, ইন্টারনেটভিত্তিক পড়াশোনা-যা কেড়ে নিয়েছে মানুষের বই পড়ার অভ্যাস। আগে প্রতিটি এলাকায় লাইব্রেরি ছিল। বই নিয়ে মানুষ সেখানে আড্ডায় লিপ্ত হতো। সেগুলো এখন নেই বললেই চলে। দেশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

বইয়ের প্রচারে নানা আয়োজন করা হয়। কিন্তু কীভাবে বইপড়ার প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তোলা যায়-তা কি কখনো ভেবে দেখেছি আমরা? দেশে শিশুকাল থেকে বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য কোনো কর্মসূচি পালন করি কি? এসব করি-না বলেই বইপড়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে মানুষের।

তাই পরিশেষে বলতে চাই, বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে আমাদের। এ জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে। আসুন, আমরা আমাদের প্রিয় মানুষকে উপহার হিসাবে বই দেওয়ার প্রচলন করি। আগের সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের।

দেশের প্রত্যেক জায়গায় লাইব্রেরি স্থাপন করতে হবে। তাহলেই মানুষ বইপড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। তারা গড়ে উঠবে সুনাগরিক হিসাবে। বই হোক উপহারের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। বই গড়ে তুলুক একটি আলোকিত বাংলাদেশ।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ /এমএম