বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: একুশে পদক পাওয়া নজরুলসংগীতের বরেণ্য শিল্পী, গবেষক, স্বরলিপিকার ও সংগীতগুরু খালিদ হোসেনের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁর বয়স এখন ৮৪। অনেক বছর যাবৎ তিনি হৃদ্রোগে ভুগছেন। ইদানীং তাঁর কিডনির জটিলতা বেড়েছে। ফুসফুসেও সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যা। তিনি এখন রাজধানীর জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ৯ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন।
আজ বুধবার সকালে খালিদ হোসেনের ছেলে আসিফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রতি মাসেই হাসপাতালে আনা হয়। তখন দুই-তিন দিন তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি থাকেন। এবারও ৪ মে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা বাবাকে আর ছাড়েননি। চিকিৎসকদের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, বাবার অবস্থা এখন একেবারই খারাপ।’
খালিদ হোসেনের চিকিৎসার সহায়তার জন্য এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। আসিফ হোসেন বলেন, ‘অনেক আগে বাবাকে এই সহযোগিতা দেওয়া হয়েছিল। এখন তাঁকে প্রতি মাসে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়। এর জন্য সব মিলিয়ে এক লাখ টাকার ওপরে খরচ হচ্ছে। তা ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা খরচ তো রয়েছেই।’
খালিদ হোসেনের জন্ম ১৯৪৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তখন তাঁরা ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে। দেশ বিভাগের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে তিনি চলে আসেন কুষ্টিয়ার কোর্টপাড়ায়। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় আছেন।
নজরুলসংগীতের শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত আছেন দীর্ঘদিন। সারা দেশে ও বিদেশে রয়েছে তাঁর অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। তিনি একুশে পদক পেয়েছেন ২০০০ সালে। এ ছাড়া পেয়েছেন নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদক, কলকাতা থেকে চুরুলিয়া পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা।
খালিদ হোসেনের গাওয়া নজরুলসংগীতের ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। আরও আছে একটি আধুনিক গানের অ্যালবাম ও ইসলামি গানের ১২টি অ্যালবাম।
খালিদ হোসেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ডে সংগীত নিয়ে প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুলসংগীতের আদি সুরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য তিনি।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৫ মে ২০১৯/ এমএম