Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::

অতঃপর
পিয়াস মজিদ

কতদূর তোমার ব্রহ্মমিনার! যত উপচার শেষ বিদায় কিংবা
পহেলি পেয়ার; ফুলদল থেকে যা ছিল নির্বাচনে অথবা
দৈবচয়নে। বৃদ্ধ ভুবনের অবশেষ তন্বী মরণ।
সব দেখেশুনে নীরব নিরবধি।
এইবার তবে নিঠুর শান্তির শাস্তি…

প্রহেলিকা
চামেলী বসু

জীবন যেন এক অসার জোছনা
আলোর ক্লান্তিতে ঘুমায় পাতার কান্না
অপয়া মুগ্ধতার অতলান্ত বনে ডুবে ডুবুরি
যা কিছু আঁকড়ে বাঁচায় খড়কুটা
অথবা ভাঙাচুরা মনের ক্ষতে প্রলেপ দিতে দিতে
একান্ত ব্যক্তিগত প্রজ্বালনে দগ্ধ শপথ ভুলে
পেয়ে যাই বহেমিয়ান নগ্ন ডানা-
মেঘের বাসর শয্যায় আকণ্ঠ পিপাসায় মত্ত এই আমি
টুপ করে ঝরে যেতে যেতে
তোমার চিবুকের তিলে ঠোঁট ছুঁয়ে
বলে দিতে পারি এ কোন প্রেম নয়,
প্রেমের প্রহেলিকা।

পুণ্যের শূন্য খাতা
কামরুন নাহার কুহেলী

বুকের অশান্ত কোণে কাল বোশেখির তাণ্ডব-
নিঃশব্দে দগ্ধ সময়ের শ্যাওলাপড়া কালো অতীত
কপাট খুলতে থাকে একটার পর একটা;
পাপ ছোঁয়া বাতাসে আমি তোমার সব পুণ্য মিশে যেতে দেখি!
ওই দেখো-
তোমার কামুক হাত কিলবিলিয়ে যাচ্ছে-
জুলুমে কোঁকড়ানো ঘামে ভেজা নারী শরীর
আতংকিত কিশোরী বিস্ফারিত চোখে দৌড়াচ্ছে
সময়ের হিসেবে অপূর্ণ রক্তাক্ত শিশু হামাগুড়ি দিচ্ছে
তোমার পুণ্য খাতায়!
বোধগম্যতার শূন্য হাহাকার মুছে দিচ্ছে
তোমার পুণ্যের যোগ চিহ্নগুলো;
গণিতের হিসেবে নিমেষেই তোমার পুণ্যের খাতা
শূন্য হয়ে যাচ্ছে!

ম্যারাথন
সাইয়্যিদ মঞ্জু

পথের শেষে কেউ নেই, না নেই
আর কোন পথও নেই চলার
ম্যারাথনে নামে ক্লান্তির ছায়া সঙ্গী কেবল নিজে।

চোখের ঘরে আঁকিয়ে যায় সন্ধ্যাকাশের পাখি
ফিরে যাবার পুরনো সরণি মানচিত্রের মতো।

পৃথিবীর আদি উপাদান
মারুফ আহমেদ নয়ন

পৃথিবীর আদি উপাদানের বর্ণনা করছো। আমি মুগ্ধ হয়ে
শুনছি। জল অগ্নি ও হাওয়ার চিরায়ত ধর্ম। পাপ বুঝি
ক্ষমা প্রার্থনায় ঝরে যাচ্ছে, নেমে আসছে আশ্চর্য বৃষ্টির
রাত। চারদিকে হাওয়াদের গুঞ্জন, হাওয়াদের ভেতরে বুঝি
আজ বালিকার বিবাহ রাত্রি। তবুও কোনো জোনাকিযান
নেই। আমার মৃত্যু বুঝি এভাবেই বুঝি কামনা করছো।
আমার শবদেহ আমাকে বহন করতে হবে। কাফন ক্রয় ও
কবর খননের জন্য কাউকে নির্দেশ করছো না। তুমি হাত
ইশারা করছো আর হাওয়ার ভেতরে অজস্র ডুমুর গাছের
পাতা ঝরছে।
আমার শব বহনকারী পাখিরা পথ ভুলে যাচ্ছে।

সৃষ্টির রহস্য
বীথি রহমান

প্রচলিত আছে, কবিরা চরিত্রহীন হয়
আমি অবশ্য কানে তুলি না সেসব
হাইড্রোজেন বোমায় নগর পোড়ে
তাই বলে কি টেলার উপেক্ষিত?

পুরনো মন্জুরি
শাহিন আখতার

রামসাগরের শীতল জলে,
ভাসালে কে কলার ভেলা?
ওকি এ কালের লখিন্দর?
পাড়ে বসে কাঁদে কি বেহুলা সুন্দরী?
এ তো দেখি বড় জ্বালা!
নতুন করে
বাজে কেন পুরনো মন্জুরি!

ধূসর ব্যানার
তানিয়া হাসান

ঘুমন্ত স্কেচখাতার পাশে অন্ধ আড়ষ্ট আঙুল
বুনছে স্বপ্নের তাঁত!
পাহাড় টপকিয়ে সমুদ্রের লিরিক ঢেউগুলো
ফেনার দাঁত খুঁটে খায় কাঁচা সম্ভ্রম
অহমের স্থানত্যাগ
শোষিত নির্জনতায় সুগন্ধি গুহার মাঝে
একঝাঁক মাছি ধূসর ব্যানারে দেখে অসম্মত চাঁদ

লেবিরিন্থ
সাজ্জাক হোসেন শিহাব

অন্ধকারের মতো এক শূন্যতা দিয়ে শুরু। হুম,
এরপর খালি ঘুরছি আর ঘুরছি। কিছু দূরে
গিয়ে অন্ধকার থেকে শুধু আলো দেখি। তারপর
অন্ধকার? শুধু অন্ধকার? আমার ঘোলাটে এই
চোখকে আবার স্থির করে আলোর ফোয়ারা।
কিন্তু কোথাও কোনও জীবন-হদিস নেই। অবিরাম
উল্টোদিকে দূরপানে হারিয়ে যাচ্ছি। অগ্রগতির
সাথে চিরকালীন এ-ডাক সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে,
চিত্রটির বিকৃত ধাঁধার টুকরো থেকে কি স্পষ্ট
হচ্ছে? দূষিত জীবন পার করে গোপনে গোপনে
কোনো এক পবিত্রতার পথে মিশে! অন্তহীন সে
যাত্রায় কী অপেক্ষা করছে? শূন্য ও অন্ধকারের
সেই গল্প শুনতে, জানতে মন চাই, লেবিরিন্থ!

নতুন কবিতার নামে
চাণক্য বাড়ৈ

এই হিরণ্য সন্ধ্যায় আমি চুপ হয়ে থাকি- কথা বলুক আমার প্রিয় পঙ্ক্তির কবিতা-
আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে ধরে নিতে পারি, এই পৃথিবীর সাথে সে কেবল একা হতে
চায়- যেমন, এমন অনেক আকাক্সক্ষা নিঃশব্দে লুকিয়ে রাখে গোপন প্রেমিকা-

আর প্রেম, সে তো এক নীরব বজ্রপাতের নাম।

এক ধূর্ত শেয়াল এই গোলাকার বস্তুটিকে নিয়ে খেলা করে শুধু- আমি চাই না,
লৌহযুগের কামারশালার পাশে কেবল নিরুত্তেজ দর্শক হয়ে থাকি-

নতুন কবিতার নামে আমি তাই প্রেমিকার গোপন নাম ডায়রিতে লিখে লিখে রাখি-

অসীম ছোঁয়ার আশা
সবুজ আহমেদ

স্বরলিপি প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হয়েও হয় না?
কবে অন্ধকার কেটে আলো আসবে কে জানে-
ঊষার পূর্বাভাস বেদনার যবনিকা সহজে যাবেনা
ডানামেলে মুক্ত আকাশে উড়ার যে স্বপ্ন দেখে চোখ
আসলে তা বুমেরাং-পুবের হাওয়া প্রশান্তির নয়, অশান্তির!
হৃদনদের নীল জল ইদানিং বেশ বাড়াবাড়ি করছে;
সবুজে ঘেরা আনন্দের বনে হিল্লোল ধুম ছিল যখন
তখন মনমিনারে গিয়ে বসতে,গাইতে কিন্নরকণ্ঠে গান
এখন লোলুপ জিহ্বার চুম্বনে বিশ্বাসের পশম পচে বেরোয় ঘ্রাণ

প্রচণ্ড ভরসায় অসীমে ওড়ার ডানা পিচাশ উপড়ে ফেলছে পালক।

টেলিস্কোপ
হিরণ্য হারুন

মহাজাগতিক স্টেশনে অপেক্ষার প্রহর গুনে গুনে
একটা ভ্রমণ ব্যাগ নিয়ে চড়ে বসি বিবর্তন এক্সপ্রেসে।
দেখি?কিছু একটা ঘটছে দূর অলক্ষ্যে ভ‚ত, ভবিষ্যতে।
‘হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তার নীতে’ আমি চুরি করি
কিছু সময় মহাজাগতিক সংশয় ও বিশৃঙ্খলার মুখে
তবু ব্লাকহোল কিছু ভাগ নিয়ে নেয়।
জানলার শার্সিতে লেগে-থাকা কুয়াশার মানচিত্র মুছে
কিছু কর্মফল স্থান করে নেয়?
তন্দ্রাচ্ছন্ন আত্মকেন্দ্রিকতার দোলনায়।

একাদশী
স্নিগ্ধা বাউল

কুকুরের মতো কোন এক টিউন কণ্ঠের দাপট জেগে রাতের
পাহারায়, দ্রুত গতির অন্ধকারের সাথে; জানালায় কথা বলে
আগত দিনের এপিটাফ একাদশীর হিম রাতে- একা লাগে তার
আমার মতো। পাথরের অক্ষরে লিখে রাখা পৃথিবীর ইতিহাসে
জেগে থাকে সমুদ্র একা, বিনষ্ট সভ্যতা একা আরও একা
একাধিক সময়। কবরের স্তব্ধতা কথা বলে অবিকল কবির
ভাষায়, যেন শব্দের কাঁটায় তৈরি অনবদ্য সারগাম; রুপার
প্রলেপে সাজানো পায়ের তলা, পাহাড়ি নদীর শরীরে। এমন
পুষে রাখার নাম প্রেম, অনবরত ক্রন্দন প্রাগৈতিহাসিক মাতৃকা
উপাসনার চুষে নেয়া স্তনের মায়া। কি বীভৎস পথ মানবী জমিয়ে
রাখে গোপনের নামে, প্রাজ্ঞ ঋষির আনন্দের খেয়ালে।

নিজের প্রয়োজনে ডুবে অস্তের সূর্য
দিনের আলো উপোষীর ভোগ।

নীরবে গাঁথে
ফিহির হোসাইন

এক ফোঁটা বিষে মিশিয়ে দিয়েছে আরেক ফোঁটা বিষ
অজানার শূন্যতা চেপে আছে হিমালয় পাহাড়ের মতো
ফ্রিজের তরল পানি বরফ হওয়ার মতোই জমাট বেঁধে আছে
হৃদয়ের অস্পর্শ কোণে
এখন আর সেই কষ্টকে কাছে পাই না,
পিনপিন ব্যথাও অনুভব হয় না
অঝোর বৃষ্টির মতো শুধু তার জ্বালাতন সুঁই হয়ে গাঁথে

একদিন এমন তুমুল বৃষ্টি হলে
ইব্রাহীম রাসেল

একদিন এমন, তুমুল বৃষ্টি হবে। পাতায় পাতায় ছন্দ তুলে,
গাছেরা দুঃখ যাবে ভুলে। সেদিনের সেই বৃষ্টি, হাসি ফোটাবে,
পৃথিবীর সব মলিন ফুলে।

তুমিও সেদিন, ঘর থেকে পা ফেলে, এই ঘাসের কোলে, চুলের
খোঁপা দেবে খুলে। পৃথিবী যতই, ঢেকে থাক নীলে, এই হাওর-
নদী-খাল- বিলে, আবারও প্রাণ উঠবে দুলে।
একদিন এমন তুমুল বৃষ্টি হলে, আমিও তার জলে, ভেজাবো
আঙুল। জলে ভেসে ভেসে, সে আঙুলের ছোঁয়া, লাগবে গিয়ে,
তোমার খোলা চুলে।

মধুবাস এবং দৃষ্টির গোলমাল
শাহমুব জুয়েল

ক্ষতের সাগরে ডুবে জোৎস্নামাখা হাসিই
একদিন ফাঁস করে দিবে সব; অযাচিত ভুল
মায়ার রাজত্বে চষে যাওয়া সিংহও যে
শুয়োর শৃগাল কুকুর কিংবা আহ্লাদি বেড়াল।
আপন কোন রক্তই নয়; স্বার্থ বা মোহের বেড়িবাঁধ
ছুটি হলে ভেসে যায় প্রেমের গ্রাম কিংবা শহর…

ঘর কিংবা বাহির দুটোতে দুটো রীতি
গ্রীষ্ম যেমন চলিত বর্ষা তেমন সাধু ;
বর্ষাতেই বাঙালি মাতাল…

কুনোব্যাঙ যদি বলি ঘরকোণেই তার সিংহাসন
কোলা ব্যাঙ হলো জল-ডাঙার নেতা
বিচার কেবল শ্রীতে নয়;
উদারতার, সাম্যের, উপভোগের-
কারো খাদ্য আন্ধার কারো জোনাকি পোকার;
কখনো সোজা কখনো বাঁকা কেবল শেকড়ের মধুবাস
এসবেই তো খাইলোরে সাজানো দেয়াল
চুনোপুটি ভেবে কে দেয় খেয়াল;
যা দেখছেন শুনছেন সবই দৃষ্টির গোলমাল।

আমি
আশিক বিন রহিম

এই যে আমি স্বপ্নে নামি একলা একাই!
তুমি বিহীন মেঘলা আকাশ শূন্যে তাকাই।

স্মৃতির দুপুর টাপুর টুপুর বৃষ্টি নামে!
ভিজে পাখি তৃষ্ণ আঁখি মনের গ্রামে।

দিলাম চিঠি হৃদয় দিঠি খোলা আছে!
চাইলে এসে মুচকি হেসে বইসো পাশে।

পথের শুরু
মাহমুদ নোমান

একটা সুন্দর মিথ্যে থেকে আমার জন্ম
টিভিতে দেখাচ্ছে ফুল ডোবে গেছে,
এর মধ্যে লাইট ক্যামেরার বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে
দৃশ্যত চমক, জরির মালায়
আটকে গেছে বাবার প্যান্টের চেইন
আয়নায় ঢুকে গিয়ে ঘামছে,
ছেড়ে দিচ্ছে পরিচালকের বাঁশির সুর
ফলত আমার মধ্যে চুম্বক জমেছে
কাছে টানতে টানতে
কেউ কাছে টানার সুখ ভুলে গেছি
বাবাও মাঝে মধ্যে দেখা দিতেন
স্বর্গের কাছাকাছি একটা বিলে
খুব অন্ধকারের ব্যথায়
ঘর পালিয়ে যেতে পারিনি

পথের জন্ম আমার নির্দেশে,
মাটি কেটে শোধরাতে চেয়েছি সন্তাপ

দৃশ্য
হাবিবুল্লাহ রাসেল

আলিশান বাড়ি, গাড়ি, বৈদ্যুতিক তার দেখলেই শহর ভেবো না। গাঁ
বলতে বুঝো না নোংরা শিশু, প্যাচপ্যাচে কাদা, ভাঙা টয়লেট।
এখানে ক্ষেতের পাশে বহু আছে কাঁচা-পাকা ঘর কিংবা অট্টালিকা।
বিদ্যুৎ বাতি-জোছনা মিলেমিশে পাহারা দেয় গোবরলেপা উঠোন,
শাপলা-পুকুর। গাঁয়ের মানুষ লাইভ দেখে- শহর ভেসে গেছে সামান্য
বর্ষায়- ম্যানহোলে আটকে আছে শহরের ধ্যান।

পল্লীমেয়ে শাওয়ারে স্নান করে, ইচ্ছে হলে দেয় নদীজলে ডুব। সেও
ভার্চুয়াল আকাশ দেখে, বিউটি পার্লারে যায়, পিচপথে হাঁটে, নাচে
সাজুগুজু চুল। এ দৃশ্য দেখে তুমি শহর ভেবো না। কৃত্রিম লেকের
পাশে বসে খুুঁজো প্রকৃতির ফ্লেভার।

অজপাড়া-গাঁয়ের অজটুকু গেছে তোমাদের এডিস শহরে। যদিও রোজ
টাটকা সবজি নিয়ে গাড়িগুলো শহরে যায়, ফিরে বুদ্ধির দূষণ নিয়ে।

জিজ্ঞাসা
কুশল ভৌমিক

সম্পর্কের সুতো বেয়ে হাঁটতে হাঁটতে
ভাই একদিন ভাইরাস হয়ে যায়
ক্রমাগত হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে
মিথ্যা যেমন হয়ে যায় মিথ।

তবুও জলের ধর্ম মেনে
আমরা ভাসি-ডুবি
সম্পর্কের ঘনত্ব মাপি জলের নিয়মে।

আর্কিমিডিস, আপনার কি জানা আছে
সম্পর্ক ডুবে গেলে
কেন আর ভেসে ওঠে না কোনো দিন?

নগর যুবক
আফসানা জাকিয়া

বিগত দিনে পাশাপাশি বসে দেখলাম নদী ফের
নীরব সুখে বেড়ে ওঠা মোহ এ জীবন বিবেকের
তুমি মানবিক তবু চারপাশে নাগরিক হাওয়া দোলে
ধোঁয়া চিরকুট হয়ে যায় সেই নিঃশ্বাসে দ্বার খোলে
শুধু অপচয় দিনগুলো হয় ঊষার সবুজ আলো
কেন বোঝ না আমি কাম-রাঙ্গা দাবানলে ঘি ঢালো
বর্ষণ ছাড়া ভেজে নাকো মাটি কালান্তরের ঝড়ে
শুধু দর্শনে তুমি ভেজো মনে আনন্দ বৈভবে।

আপেলমুখ
নিলয় রফিক

বাঁকখালী-দেহরূপ প্রেমের মুগ্ধতা ইতি-টেনে
গ্রামীণ সড়কে পাশে, বৃক্ষছায়া যুগল আয়েশ
পায়রা-ঘুঘুর গানে, ঘুমঘোরে ফুলের সকাল
রোদের ডানায় স্বপ্ন চাষে পার কৌশল-মহলে।

সন্ধ্যায় নদীর ঘাটে, ক্লান্তিদাগ জলের শিরায়
একাকিত্ব প্রকৃতির শব্দঘরে চোখের কুহক
আড়ালে আপেলমুখ, আড্ডার নাহারে দেখা হবে
শূন্যতা টেবিল ফাঁকা,স্মৃতির সৌরভ গন্ধ ডাকে।

আলোর আঁধারে বাঁকে পোড়াবিলে নির্জনে আলয়
অদূরে কবিতাবাড়ি,পরিচর্যা চিন্তায় মগ্নতা
কুনজরে লাঠিবাহু নামজারি ভ‚মির দপ্তরে
সীমানা দেয়াল-রেখা, বীজতলা অমৃত সুরভি।

চিহ্ন বিজ্ঞান
সানাউল্লাহ সাগর

প্রতিদিন নিজের সামনে দাঁড়াই
হার থেকে নিজেকে রক্ষা করা বোকামি মনে হয়
মেনে নিই শাদা হাহাকার; সহস্র চিৎকার।
জ্বলজ্বলে নিষেধ তাকিয়ে থাকে আমার চোখে
আমি বিপন্ন; অদৃশ্য হই
জ্বলে জ্বলে ফুরিয়ে যাই, অতিদ্রুত

বুক ফুলিয়ে গদ্যরা আসে
ঘাসের কানে জমে ওঠে ভৃত্য ও নাচের মোহক্স
আমার প্রজ্বলিত কালো বৃত্তান্তে সারি সারি ছিনাল দাঁড়িয়ে যায়
ভয়ংকর সব আত্মীয়রা আসে; আমি হেরে যাই।
অতঃপর হেরে যাওয়ার জন্যই আবার বেঁচে উঠি…

জলের তলে
শ্রাবণী প্রামানিক

কেউ বলেনি দাঁড়াও বা প্রতীক্ষায় থাকো
তবুও দাঁড়াতে চায় সমস্ত অন্তর- বাহির
দুই পায়ের নিচে অচেনা দুই বহতা স্রোত
সরে যাচ্ছে মাটি… বালু আমূল শেকড়
ভেসে যাচ্ছে তোড়ে দীর্ঘতম আগুনরাত
ফেরাবে যদি এখনই ধরো মন মাখানো হাত
হাত বাড়িয়ে হাতড়ে বেড়াই জীবনের পড়া পাতায়
ভুলে না যাওয়া অচেনা গল্পে আঙ্গুল ছোঁয়াই
চেনা রাত, চেনা গন্ধ, চেনা স্পর্শ, চেনা চোখ
একবার অচিন পাখির সুর তুললে; আর চেনা যায় না
জীবন হয়তো এর বাইরে না পেরোনো গণ্ডি
জীবন হয়তো এ রকমই শুষে নেয়, মিশে যায়,
প্রবাহিত জলের মতো। ডুবতে ডুবতেই ডুবুরি হয়।
ভালোবাসার প্রখর খরায় বান ডেকে গেলে
ভাসতে ভাসতে বান ভাসি হয় জলজীবন।

অসুখে ধরা পৃথিবী
জান্নাত লাবণ্য

জানতাম একদিন এমন ঘটবে
কিন্তু তবুও ভরসা ছিল থাকবো না আমি,
হব না অসহায় সে সময়ের সাক্ষী।
মৃত্যুর শব্দটা শুনতে চাইনি কোনদিন
সকলের সাথে একান্ত হয়ে।
তবুও অসুখে ধরা পৃথিবীর গণ্ডিকে অতিক্রম করে
উদিত হবে মহিমার আলো।
ঘুন ধরা মনুষ্যত্ব জমাট বাঁধা থেকে মুক্ত
হবে বৈশ্বিক উষ্ণতায়।
জানি আবার ভালোবাসা ছড়াবে তার
সুশীতল ছায়া, কিন্তু
সেদিন হয়তো থাকবো না আমি।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০/এমএম


Array