Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: হঠাৎ কোথাও থেকে আসা ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে যায় কালো পাখি
বাতাসের ঘূর্ণিতে দিশাহারা, ঘিরে ফেলা বাতাসের ব্যূহ ঠেলে নিয়ে ফেলে
রাস্তার ওপাশে নিভে যাওয়া লাইটপোস্টের তারে, শাদা বিদ্যুতের ঝলকানি
কালো আকাশ চিরে বজ্র ধমকে জ্বলে উঠতেই গাছ থেকে একটা ভারী
ডাল এসে গলা চেপে ধরে তার, গোঙানির সুরে কালো পাখি বলে,
‘নি:শ্বাস নিতে পারছি না আমি, দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার
সরিয়ে নাও আমার গলদেশ চেপে ধরা তোমার হাঁটুর চাপ
দয়া করো, দয়া করো আমাকে তোমার নিষ্ঠুর মার থেকে
নি:শ্বাস নিতে দাও, আমার অন্ত্রনালী ব্যথায় উঠছে কেঁপে
মা, আমি মরে যাচ্ছি, মা জল দাও এই শুকনো ঠোঁটে!’

সাদা পাখি, কালো পাখি যারা ছিল গাছের ডালে, বলে সমস্বরে
‘উঠিয়ে নাও, উঠিয়ে নাও তাড়াতাড়ি করে তোমার হাঁটুর চাপ
মরে যাবে, আহা, ও যে মরে যাবে …’ গর্জাতে থাকে শাদা বিদ্যুত্
চেপে ধরে থাকা ভারী ডালে, ঘূর্ণি বাতাস পাক খেয়ে খেয়ে পাখিদের
সব তফাত্ করে রাখে। বিদ্যুৎ মিলিয়ে যেতেই ঝরঝর করে বৃষ্টি নামে
মানুষের কান্নার মতো অবিরল; সাদা পাখি, কালো পাখি চিত্কার করে বলে,
‘মরে গেছে, মরে গেছে, ওকে তোমরা গলা টিপে মেরেই ফেলেছ অবশেষে!’
আকাশের বুক কেটে শাদা বিদ্যুত্ ছুরির ঝলকে আরেকবার জ্বলে উঠতেই দেখা
যায় শতাব্দী প্রাচীন আশ্চর্য কিছু ফল গাছে ঝুলে আছে মানুষের মতো অবিকল
কালো, কালো দেহ, দোল খায় বাতাসের প্রবাহমানতায়— নিচে গাছের শেকড়
রক্তে উত্কীর্ণ ইতিহাসের উল্কি নিয়ে চলে গেছে অন্ধকার মাটির গভীরে!

বিকেলে যখন সূর্য পড়ছে হেলে, ফ্লয়েডের ভাই নিখিল তাস খেলে
ইশকাপন, হরতন, রুহিতন, চিড়িতন তাসের ভিতরে তাস গুঁজে
বা’হাতে সাজিয়ে তাস যেভাবে চীনা পাখা পেখমের মতো খোলে
চোখের কোন দিয়ে ডান বামে দেখে অথবা চোখের পাতা একটু
উপরে তুলে মনে মনে মাপে ইয়ার দোস্তরা কতটা সুনিপুন চালে
ফেলছে তাসের দান, এই যে রাজা রাণী গম্ভীর চাহনি মুদ্রিত তাসের
গায়ে কত না শতাব্দীর রাজ্য দখল আর ক্ষমতার লড়াই গর্জন করে ওঠে—
সে যে নিতান্ত কৃষক গায়ে ধানের ঘ্রাণ, চিটা গুড়ের সাথে তামাক মাখিয়ে বেশ
হুঁকোর গুড়গুড় টানে সুগন্ধি ছড়িয়ে দিয়ে গরীবের রাজা বনে যায় ভয়-ভয় এই
করোনার কালে— সে কী জানে অদৃশ্য করোনার থেকে শক্তিমান করোনা ওঁত্ পেতে
আছে শিকারপ্রবণ রাজাদের তীব্র জ্বলজ্বলে চোখে। খেলা রেখে সঙ্গী তিনজন দৌঁড়ে
পালায় আর ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে নিখিল পা উল্টে পড়ে যায়— সহসাই ঝাঁপিয়ে পড়ে
তার উপর উন্মত্ত একটা ষাঁড় গায়ে খাকিরঙ পুলিশের পোশাক, এলোপাথাড়ি
তার পিঠের ‘পর বয়ে যায় ঝড়ো বেগে কিল ঘুষি ভারী বুটের লাথি
জানে না সে কোন অপরাধ! “মেরো না, মেরো দেশি ভাই আর
পায়ে পড়ি তোমার, আধা বেলা খেয়ে বাঁচি, আমার দেহে অত
বল নাই, এতো জোরে মেরো না যাতে এই মেরুদণ্ড ভেঙে যায়!’
‘খাঁচা তোর ভেঙে দেব আমি, দেখি তুই কোন পাখি পুষে রাখিস
দেহে, বেজন্মা বিধর্মী ঈমানের দেশে তাস খেলিস দিন দুপুরে!’
হাঁটুর বিকট চাপে মটমট করে ভাঙে নিখিলের পিঠে একতারা তার
চীত্কার!— তিনটি টুকরো পড়ে থাকে অববাহিকায় পদ্মা-মেঘনা-যমুনার …

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৫ জুন ২০২০/এমএম


Array