জামসেদুর রহমান সজীব
টিফিনের ঘণ্টা বাজতেই ক্লাস থ্রির ছেলেমেয়েরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল চলে যায় সোজা স্কুলের মাঠে খেলাধুলা করতে। আরেকদল নিম্মিকে ঘিরে ক্লাসের এক কোণে বসে পড়ে। মজার মজার সব গল্প শুনতে।
নিম্মির বয়স কম হলেও গল্প বলার বেলায় বড়দেরও হার মানিয়ে দেয়। আজকে যখন সবাই নতুন গল্প শুনতে উদগ্রীব হয়ে আছে, নিম্মি তখন ওর গোল চশমাটার এক ফাঁকে সবার চেহারা দেখে নেয়। অবাক হয় মেয়েটা। রোজ নতুন নতুন কেউ না কেউ যোগ হচ্ছে তার গল্পের আসরে। গলা খাকারি দিয়ে সে বলতে শুরু করে, ‘আজকে তোমাদের অল্পবিজ্ঞান কল্পবিজ্ঞান এর গল্প শোনাবো।’ নিম্মির কথা শুনে সকলে মাথা চুলকায়। ভূতের গল্প, জিনের গল্প, চোরের গল্প শুনেছে তারা। এই অল্পবিজ্ঞান কল্পবিজ্ঞান আবার কিরকম গল্প! একজন তো নিম্মির কাছে জানতেও চাইলো।
তখন সে বোঝালো, যেই গল্পে অল্প একটু বিজ্ঞান এবং কল্পনায় ভাবা বিজ্ঞানের সম্মিলন করা হয় তাকে সে এই নাম দিয়েছে।এরপর নিম্মি যেই গল্পটা দাঁড় করাল সেটা এমন যে বিশাল বড় বড় উড়ন্ত বাহনে করে হাজার হাজার মানুষ পৃথিবীর বাইরে থাকা গ্রহ-নক্ষরে ঘুরতে যাবে। সেখানে নতুন প্রাণের সন্ধান করবে। কেউ কেউ বসবাসের জন্য থেকে যাবে সেখানেই। এমনও হতে পারে, এলিয়েনদের দেখা মিলে যেতে পারে! তখন মানুষ ও এলিয়েন একসঙ্গে বসবাস শুরু করবে!
গল্প শেষ হবার পর নিম্মি খেয়াল করে দেখে সবার মুখ হা হয়ে আছে। তপু তো বলেই বসল, ‘সব মিথ্যে। এগুলো অসম্ভব!’ নিম্মি এই কথারই অপেক্ষায় ছিল। ব্যাগ থেকে পুরনো পেপার কাটিং বের করে চন্দ্র অভিযান, মঙ্গলগ্রহে পানির সন্ধান পাবার খবরগুলো সবাইকে দেখায়। এবার তো সবাই পুরোপুরি অবাক। নিম্মি আরো এক দফা অবাক করে দেয় সবাইকে এই বলে যে সেও একদিন মহাকাশ অভিযানে যাবে। সেজন্য মনপ্রাণ উজার করে পড়ালেখা করবে সে। শুনে বাকিরা হৈ-চৈ ফেলে দেয়। আবদার জানায়, মহাকাশে গেলে যেন ছবি তুলে পাঠায় ওদের।ফিক করে হেসে দেয় নিম্মি। সবার নাম টুকে রাখে খাতায়, যাদের যাদের ছবি পাঠাতে হবে!
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৭ জানুয়ারি ২০২০ /এমএম





