Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: গত মাসেই ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক দেব। এর আগেও তিনবার ঢাকায় এসেছেন তিনি। সে সময় এসেছেন অন্যের কাজে। তাই ঢাকাই সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে গেছেন, সময় দিয়েছেন কম কিংবা কথাই বলতে চাননি। এবার অবশ্য ভিন্ন। একেবারে যেচে পড়ে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থিত! হতেই হবে।

এবার যে নিজের প্রয়োজন! এ প্রয়োজন মেটাতেই ঢাকা এসে ঘটা করে রাজধানীর একটি অভিজাত ক্লাবে কথার মালা সাজিয়ে বসলেন। সেই প্রয়োজনটা কী? প্রয়োজনটা হচ্ছে, এতদিন এসেছেন অন্যের ছবির কাজ করতে। এবার এসেছেন নিজের প্রযোজিত ছবির প্রচারণায়।

বাংলাদেশেও যে তার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। আসতে তো হবেই। আবার এসে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন সেটাও পূর্বনির্ধারিত। তো কী হয়েছিল সেদিন? কিছুটা বিমর্ষও নাকি ছিলেন! কেন?সেদিনের অনুষ্ঠানের শুরুটা ছিল বেশ খোশ মেজাজেই। সাফটা চুক্তির আওতায় তার ছবি ‘পাসওয়ার্ড’-কে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশেরই বিতর্কিত একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া। যার কর্ণধার সদ্য দেশ তোলপাড় করা ‘ক্যাসিনো কাণ্ডের’ সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে অভিযুক্ত সেলিম খান। ঢাকার ক্যাসিনো সম্রাটের সঙ্গে এই সেলিম খানের বেশ দহরম মহরম ছিল। তাদের খোশ-গল্পের গোটা কয়েক ছবিও প্রকাশ হয়েছে।

আবারও এই সেলিম খান নাকি এক সময় রিকশাচালক ছিলেন। সেখান থেকেই নাকি ‘আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ’ পেয়ে রাতারাতি বড়লোক হয়ে গেছেন! এই সেলিম খানের নতুন ছবি ‘মিশন সিক্সটিন’-এ নাকি দেব অভিনয় করবেন। এবং এটাই হবে তার প্রথম বাংলাদেশি ছবিতে অভিনয়।

নিজের মুখেই সেদিন দেব সেটা বলেছেন। তাই এমন বিতর্কিত একজন মানুষের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসা, তার সঙ্গে বারকয়েক মিটিং করা নিয়ে দেবের প্রতি জিজ্ঞাসুর দৃষ্টি গণমাধ্যমকর্মীদের শুরু থেকেই ছিল। তাই তারা অপেক্ষায় ছিলেন আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্যপর্ব কখন শেষ হবে। এক সময় শেষ হল। এলো সেই কাক্সিক্ষত প্রশ্নোত্তর পর্ব। যুগান্তরের পক্ষ থেকে দেবের কাছে তিনটি প্রশ্ন ছিল।

প্রশ্ন-১ : আপনার ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি কলকাতায় মুক্তির পর আশানুরূপ সফলতা পায়নি। আপনি কী মনে করছেন বাংলাদেশে এটি সফল হবে কিংবা এ দেশের দর্শকরা এটি কেন দেখবেন?

দেবের উত্তর : আমি কখনই বলিনি এ ছবিটি বিশাল সফলতা পাবে। আমি চাই মানুষ আগে ছবিটা দেখুক। টিভি চ্যানেলের আধিক্যে দর্শক এখন সহজেই কম্পেয়ার করতে পারে যে আমরা কোথায় আছি। ছবির সাকসেস নিয়ে যদি শুধু ভাবি তাহলে সারা জীবন আমাদের রিমেকই করতে হবে। সেই ভাবনা থেকেই আমি প্রযোজনায় এসেছি এবং ভালো কিছু বানানোর চেষ্টা করছি। এ ছবিটি তেমনই একটি ছবি। পশ্চিমবাংলার মানুষ দেখেছে, এবার বাংলাদেশের মানুষ দেখুক। তারা মূল্যায়ন করুক ভালো নাকি মন্দ। সব ছবির বিচার যদি বক্স অফিস দিয়ে হয় তাহলে জীবনেও কেউ আগে বাড়তে পারবেন না।

প্রশ্ন-২ : যতদূর মনে হয়েছে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবির গল্পের সঙ্গে দক্ষিণ ভারতীয় ছবি ‘অভিমন্যু’র প্লট মিলে যায়। এটি কী কপি ছবি?

দেবের উত্তর : এটা দেখার জন্য হলে যেতে হবে। দেখলেই বুঝতে পারবেন এটা কপি কিনা।

প্রশ্ন-৩ : আপনি যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন সে প্রতিষ্ঠানের মালিক সেলিম খান বাংলাদেশে ক্যাসিনো কাণ্ডে অভিযুক্ত এবং বর্তমানে পলাতক। এ রকম একজন অপরাধীর সঙ্গে আপনার মতো সম্মানিত একজন কেন কাজ করছেন? এতে কি আপনার সম্মান হানি হবে না?

দেবের উত্তর : যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে বাংলাদেশের আইন খুবই স্ট্রং। আমি নিজেও একজন্য সংসদ সদস্য, আমি চাইব না কোনো অপরাধীর সঙ্গে কাজ করতে। সিনেমার গল্পটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আমি সিনেমার লোক। সিনেমার সঙ্গে থাকতে চাই। যদি শেষ পর্যন্ত কিছু হয় তাহলে সেটা সরকার দেখবে। সরকার যদি কিছু করে তাহলে সেখানে আপনার বা আমার কিছু বলার নেই।

ঠিক তিন নাম্বার প্রশ্নে এসে দেব কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলেন। তিনি হয়তো জানতেন না কোনো অপরাধীর সঙ্গে কাজ করতে এসেছেন। কিংবা তাকে জানানো হয়নি। বিষয়টি আবার তাকে জানানও দরকার ছিল। কারণ তিনি একজন সংসদ সদস্য।

এবার আসা যাক দেবের ‘পাসওয়ার্ড’ প্রসঙ্গে। কী ভাবছেন? পাসওয়ার্ড আবার দেবের হল কবে? এটা তো শাকিব খানের ছবি! ঠিক ধরেছেন, পাসওয়ার্ড শাকিব খানেরই ছবি। তবে সেটা বাংলাদেশের। দেবেরটা ভারতের। তবে হ্যাঁ, দেব বলেছেন, তার পাসওয়ার্ড নাকি শাকিব খানের পাসওয়ার্ডের আগে কাজ শুরু করেছেন। মুক্তি দিতে দেরি হয়েছে, পার্থক্য এখানে।

শাকিবের পাসওয়ার্ডের বিক্রি বাট্টা ভালোই হয়েছিল এবারের রোজার ঈদে। কিন্তু তিন সপ্তাহ আগে মুক্তিপ্রাপ্ত দেবের পাসওয়ার্ডের খবর কী? উত্তর হচ্ছে, ভালো না। তার ঢাকা মিশন পুরোপুরিই ব্যর্থ। বাংলা ছবির দর্শকরা আপাতত অভিমানের ঝাঁপি খুলে বসে আছেন। তাদের কাছে কী ঢাকা, কী কলকাতা- কোনোটাই সুখদর্শন নয়।

সুতরাং দেবকেও যে পাসওয়ার্ড নিয়ে আরও একবার হতাশ হতে হবে সেটা তো পূর্বনির্ধারিত ছিলই। শুধু ঘটা করে বলাটা বাকি ছিল। সেটাও হয়ে গেল। এবার আর কী? অন্য কিছুর অপেক্ষা। তবে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়, বাংলাদেশি ‘মিশন সিক্সটিন’-এ কি দেব শেষ পর্যন্ত অভিনয় করবেন? তবে সূত্র বলছে, ‘না’।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ /এমএম


Array