বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: বেরাইদে অনুষ্ঠিত হল ‘হৈমন্তিক সাহিত্য আড্ডা’। ঢাকা উত্তর সিটির ৪২নং ওয়ার্ডে বেরাইদ মুসলিম হাইস্কুল ক্যাম্পাসে শুক্রবার বিকাল ৩টায় ঋতুভিত্তিক এই সাহিত্য আসর বসে।আবুল মনসুর আহমদের ‘আয়না’ ও ‘আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর’ গ্রন্থের প্রাসঙ্গিকতা প্রতিপাদ্যে এ আড্ডার আয়োজন করে বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতি ও বেরাইদ গণপাঠাগার (বেগপা)।
‘গ্রন্থসুহৃদ’ ও বেগপা সভাপতি এমদাদ হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় মূল আলোচক ছিলেন কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজ, বিশেষ অতিথি কথা সাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল ইমরান ও কিঙ্কর আহসান এবং কবি আবদুর রহমান। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন শিক্ষাবিদ মির্জা লুৎফর রহমান। পৃষ্ঠপোষকতায় কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ।অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বেরাইদ গণপাঠাগারে ‘সপ্তাহব্যাপী আবুল মনসুর আহমদ একক গ্রন্থ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ইমরান মাহফুজ।
ডেইলি স্টার বুকস কোঅরডিনেটর ইমরান মাহফুজ বলেন, একাধারে সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, আইনজ্ঞ ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদ ছিলেন ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, জ্ঞানের বাতিঘর, এককথায় ‘আলোর দিশারী’। ঘুণেধরা, কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদানে তার ক্ষুরধার লেখনী অতন্দ্র প্রহরীর কাজ করেছে। ৯০ বছর পরেও তার লেখা গ্রন্থ ‘আয়না’, ৫০ বছর পরও ‘আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর’ গ্রন্থ দুটি উপযোগিতা, উপজীব্য এবং প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। এমন সাধককেই বলা যায়, ত্রিকালদর্শী, অগ্নিঝরা লেখক।
তিনি বলেন, সমাজকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হলে, পেতে হলে তার মতো লেখকের বই পড়তে হবে, ব্যক্তিগত সংগ্রহে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং গণপাঠাগারগুলোতে রাখতে হবে। বেশি বেশি পড়তে হবে, চর্চা করতে হবে। এর বিকল্প নেই।কথাসাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, বইপড়ার বিকল্প নেই। ফেসবুক, নেটে নির্ঘুম রাত পার করে স্বাস্থ্যহানি এড়াতে হলে, অশান্তি এড়াতে হলে বইমুখী হতেই হবে। প্রতি প্রতিবারে, প্রতি মহল্লায় পাঠাগার গড়তে হবে।
কথাসাহিত্যিক কিঙ্কর হাসান বলেন, মাদকের বিধ্বংসী থাবা, করালগ্রাস থেকে তরুণ ও যুব সমাজকে বাঁচাতে হলে বই পড়তে হবে। এর বিকল্প নেই। বইয়ের বন্ধুত্ব গড়তে হবে, মিতালী করতে হবে। সর্বত্র পাঠাগার আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে।সঞ্চালক এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ঘরে ঘরে পাঠাগার গড়ে তুলুন। মনে রাখতে হবে, পারিবারিক গ্রন্থাগার আলোকিত পরিবারের প্রতিচ্ছবি। সারাদেশে গ্রন্থাগার আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে। বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলো গ্রেডিং ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান এই গ্রন্থাগার সংগঠক।
বেরাইদ মুসলিম হাইস্কুল প্রধান শিক্ষক মির্জা লুৎফর রহমান বলেন, বই পড়লে মানুষ বিনয়ী হয়, হৃদয় শান্ত হয়, মন থেকে হিংসা-বিদ্বেষ-অহংকার মোচন হয়। শিক্ষার্থীদেরকে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য অবশ্যই আবুল মনসুর আহমদের মতো গুণী লেখকদের পড়ার আহ্বান জানান তিনি।
সমাপনী বক্তব্যের পর ডিএনসিসি ৪২নং ওয়ার্ড (বেরাইদ) কাউন্সিলর ও বেরাইদ গণপাঠাগার সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ অতিথিদের হাতে বেগপা প্রকাশিত বেরাইদ সিরিজের চারটি এবং মুক্তিযুদ্ধে বেরাইদ প্রসঙ্গ আছে এমন বই উপহার দেন।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ /এমএম