Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: ঢাকার চারপাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো হলো এই জনপদের লাইফ লাইন। জানা যায়, ঢাকার পাশের তুরাগ, টঙ্গী খাল, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী ঘিরে নতুন পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, নদীগুলোর গতিপথ পুনরুদ্ধার করে পানির গুণগতমান বাড়ানো হবে এবং নদীপথের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এর পাশাপাশি নদী প্রবাহের সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশগত অবস্থার উন্নয়ন এবং টেকসই নগর ও ভূমি ব্যবস্থাপনা করা হবে। এজন্য একটি পরিকল্পনা ও প্রকল্প তৈরি করতে প্রস্তুতিমূলক সমীক্ষা করবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই সমীক্ষা অনুসারে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি বড় প্রকল্প নেওয়া হবে।

পরিকল্পনাটি যে ভালো, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে ঢাকার চারপাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো নিয়ে এর আগেও নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলোর কোনোটিই পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। অবশ্য আগে বুড়িগঙ্গাকেও এ তালিকায় রাখা হয়েছিল। এবার বুড়িগঙ্গাকে কেন পরিকল্পনার বাইরে রাখা হলো, তা বোধগম্য নয়। বুড়িগঙ্গার দূষণ ও দখল যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে এ নদী পুনরুদ্ধার ও রক্ষার বিষয়টিও জরুরি বৈকি। ঢাকায় নগর সভ্যতা গড়ে ওঠার মূলে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর প্রবাহই প্রধান ভূমিকা রেখেছে। এসব নদীর সুপেয় স্বচ্ছ পানি কৃষির সেচ, বাণিজ্যিক পরিবহণ এবং মাছের উৎস হিসাবে যুগ যুগ মানুষের চাহিদা পূরণ করে এসেছে। কিন্তু মাত্র কয়েক দশকের ব্যবধানে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো সব উপযোগিতাই হারিয়ে ফেলেছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নে এসব নদীর পানি স্বাভাবিক গুণাগুণ হারিয়েছে। সেই সঙ্গে অবাধে চলেছে নদী ভরাট, দখল এবং দূষণ সৃষ্টির নানা তৎপরতা। ২০০৯ সালে সর্বোচ্চ আদালত ঢাকার নদীগুলোকে রক্ষা ও উদ্ধারে ১২ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন। এরপর বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধার ও রক্ষায় তৎকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনেক হাঁকডাক শোনা গেছে, টাস্কফোর্স গঠন এবং হাজার কোটি টাকার প্রকল্পও গ্রহণ করতে দেখা গেছে; কিন্তু নদীগুলোর মরণদশা কাটেনি। দখল ও দূষণ রোধে হয়নি কোনো বাস্তব অগ্রগতি। তাই এবার যখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঢাকার পাশের চার নদী ঘিরে নতুন পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে সরকার, তখন আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, বহুমুখী ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রাণপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা হবে। সেই সঙ্গে বুড়িগঙ্গা রক্ষায়ও বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৭ সেপ্টেম্বর  ২০২৫ /এমএম


Array