আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: ফেসবুক, অনলাইনে এবং ইউটিউবে ডোনাল্ড ট্রাম্প কে নিয়ে সমালোচনা করলে ইউ এস বর্ডার সার্ভিসের কর্তৃপক্ষ তাঁকে আটকে দিতে পারেন, ফেরত অথবা গ্রেফতারও করতে পারেন অবিশ্বাস্য মনে হলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ ধরনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ পেয়েছে।
এই ধরনের কয়েকটি ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে কানাডার সিটিভি একটি সংবাদ প্রচার করেছে। সেখানে বলা হয়েছে ফ্রান্সের একজন স্পেস বিজ্ঞানী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলে তাকে পোর্ট অব এন্ট্রি তে আটক করে ফিরিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এ এফ পি একটি সংবাদ পরিবেশন করেছে। সেখানে বলা হয়েছে স্পেস বিজ্ঞানী যখন আমেরিকার উদ্দেশ্যে যান, তখন তার সেলফোন ইউএস বর্ডার সার্ভিস এজেন্ট চেক করে। এবং তাঁর সেলফোনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সহকর্মীদের সঙ্গে টেক্সট এবং এসএমএস বিনিময় দেখেন এবং সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক গুলো নীতির সমালোচনা করেছেন ঐ স্পেস বিজ্ঞানী। ফলে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি, তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফ্রান্স সরকার এটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কিছু বলেননি।
কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একজন শিল্প উদ্যোক্তারও এরকম ঘটনা ঘটেছে। এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি ডিটেনশন সেন্টারে প্রায় ১২-১৩ দিনের মতো জেল খেটে আটক থেকে ফিরে এসেছেন। মেক্সিকো থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসার পথে বর্ডারে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি জানতেও পারেননি কেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কেন তাকে আটকে রাখা হয়েছে? কোন তথ্যই তাকে বলা হয়নি। সেখান থেকে তিনি অন্য একজনের টেলিফোন দিয়ে সিটিভির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পরবর্তীতে কানাডিয়ান সরকার যোগাযোগ করে। পরে যেটি জানা যায় এবং তিনি ধারণা করছেন যে তিনি অনলাইনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করেছিলেন বলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে বলে সিটিভির নিউজে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিটিভি নিউজ বলছে ইউ এস বর্ডার সার্ভিস এজেন্টদেরকে ইমপ্লাইড পাওয়ার বা ঊহ্য ক্ষমতা দেয়া হয়েছে
যে তারা যেকোনো ট্রাভেল যাত্রীকে তার পার্সোনালৎ ইলেকট্রনিক ডিভাইসেস তার মধ্যে সেলফোন , ক্যামেরা কিংবা পার্সোনাল ল্যাপটপ চেক করতে পারে। ইউ এস বর্ডার এজেন্ট এখন নিয়মিত চেক করছেন বলেও সিটিভি জানিয়েছে।
অন্যদিকে ইউএস কাস্টমস বর্ডার সার্ভিসেস প্রটেকশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে তারা মূলতঃ সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম, চাইল্ড পর্নোগ্রাফি প্রতিরোধ এবং ড্রাগ স্স্মাগলিং বন্ধ করার জন্য তাঁরা কখনো কখনো ট্রাভেলারদের পার্সোনাল ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস তাঁরা চেক করেন। কিন্তু সিটিভি নিউজ উল্লেখ করছে গত বছর ২০২৪ সালে প্রায় ৪৭ হাজার ট্রাভেলারের পার্সোনাল ডিভাইস বর্ডার সার্ভিস এজেন্টরা চেক করেছে।সিটিভি নিউজ এই বিষয়টি নিয়ে কানাডার বেশ কয়েকজন ইমিগ্রেশন কনসালটেন্টদের সাথে কথা বলেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন সাম্প্রতিক সময় তারা এ ধরনের অভিযোগ শুনছেন। যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার সময় কিংবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার সময় তাঁরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে যে শুল্ক বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে, সেখানে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ভ্রমণের গন্তব্য হিসেবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বদলে অন্য কোন জায়গা বেছে নিয়েছেন। অন্যদিকে এ ধরনের হয়রানি মূলক কার্যক্রমে অনেকেই খুব বেশি প্রয়োজন না হলে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে চলছে, বা যুক্তরাষ্ট্রে না যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে অনেককে এখন এ ধরনের হয়রানি মুখোমুখি হতে হবে। এবং প্রতিদিন এর পরিমাণ বাড়ছে বলে সিটিভি উল্লেখ করেছে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২২ মার্চ ২০২৫ /এমএম