আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: বরফাচ্ছন্ন কানাডার আলবার্টা সিটির অদূরে ড্রাম হিলার শহরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ডাইনোসর মিউজিয়াম রয়্যাল টাইরেল। তেলগ্যাসের জন্য খ্যাত কানাডার আলবার্টা প্রদেশে রয়্যাল টাইরেল মিউজিয়ামটি সিএনএনের ভোটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাইনোসর জাদুঘরের স্বীকৃতি পেয়েছে। আলবার্টার অসমতল অনুর্বর ভূমির নিচে লুকিয়ে থাকা প্রাচীনতম ৩.৯ বিলিয়ন বছরের পুরনো জীবন সৃষ্টির ইতিহাস সংক্রান্ত বিজ্ঞানের বর্ণনা ও নমুনা মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হচ্ছে।
সম্প্রতি কানাডায় ৬৯ মিলিয়ন বছরের পুরনো ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান মিলেছে।স্থানীয় গণমাধ্যম বিবিসিও সিএনএন জানায়, নাথন হ্রাশকিন নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোর তার বাবার সঙ্গে কানাডার আলবার্টায় ব্যাডলান্ড্যাসের হর্সশো ক্যানিয়ায় ভ্রমণ করার সময় জীবাশ্মগুলো দেখতে পায়।
কিশোর নাথন বলেন, দুপুরের খাবারের পর পাহাড়ে ওঠার সময় প্রাণীর কিছু হাড়ের অংশ দেখতে পাই। নাথনের বাবা ডিওন বলেন, জীবাশ্মগুলো খুব স্পষ্ট ছিল। যেন কার্টুনের দৃশ্যের মতো। পরে হাড়ের ছবি প্যালিনটোলজি মিউজিয়ামে পাঠানো হয়। এগুলো জীবাশ্ম হিসেবে চিহ্নিত করার পর প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি দলকে সেই পাহাড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
কিশোর নাথন আরো জানায়, জীবাশ্মটি পাওয়া আমার কাছে রীতিমতো সত্যিকারের ডাইনোসরকে আবিষ্কার করার মতো অনুভূতি হচ্ছে। যদিও এটি আমার কাছে স্বপ্নের মতো।৬৯ বছর আগে হাঁস-বিল্ড নামে এক ধরনের ডাইনোসর ছিল। জীবাশ্মটি ছিল মূলত এ ধরনের ডাইনোসরের বাহু থেকে হিউমারাস হাড়ের অংশ।
এদিকে এ ঘটনার পর বিমানবাহিনী প্রায় দুই মাস সন্ধান চালিয়ে আরও ৩০ থেকে ৫০টি হাড়ের খোঁজ পায়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, আলবার্টার ব্যাডলান্ড্যাসে কয়েক ধরনের জীবাম্ম পাওয়া গেছে। কিশোর নাথন ও তার বাবার আবিষ্কারের পর বেশ কয়েকবার সেই স্থানগুলোতে খোঁজ নেয় বিশেষজ্ঞ দল। গত বৃহস্পতিবার শেষ সন্ধান চালান তারা। নাথন বলেন, আমাদের আবিষ্কার করা জায়গাটিতে বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতি বেশ ভালো লাগছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে ভূ-তত্ত্ববিদ জোসেফবুর টাইরেল আলবার্টা রেডডিয়ার উপত্যকায় কয়লা উত্তোলনের সময় হঠাৎ ডাইনোসরের কঙ্কাল দেখতে পান। পরে তার নামানুসারেই ১৯৮৫ সালে জাদুঘরটির নামকরণ করা হয়।
বিভিন্ন প্রজাতির ৪০টিরও বেশি ডাইনোসরের কঙ্কাল ও তার নমুনা এখানে রয়েছে। পৃথিবীর ৩৭৫ মিলিয়ন বছরের প্রবাল প্রাচীর, বরফ যুগের স্তন্যপায়ী প্রাণী, সামুদ্রিক সরিসৃপ প্রাণীসহ নানা রকম প্রাগৈতিহাসিক জীবন ও জীব সৃষ্টির উৎসের বর্ণনা এবং নমুনাও এখানে রয়েছে।পৃথিবীর সর্ববৃহৎ টি-রেক্স ডাইনোসর, যার দৈর্ঘ্য ১৭০০ বর্গফুট, এখানে প্রদর্শনীতে রয়েছে।
শুধু মিউজিয়াম নয় এটি জীবনসৃষ্টি ও এর ইতিহাসের উপাদান সরবরাহক জীবাশ্ম সংক্রান্ত বিজ্ঞানের (Paleontology) গবেষণা কেন্দ্রও। ৩১ হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী গবেষণায় জড়িত রয়েছে। ৫ হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে Distance learning student হিসাবে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৯ অক্টোবর ২০২০/এমএম





