Menu

আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: কানাডায় বাবা মা’ ও দাদা দাদীর জন্য স্থায়ী বসবাসের স্পনসরশিপের নতুন আবেদন গ্রহণ করা সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে দেশটির সরকার।দেশটির অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মার্ক মিলারের জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান আবেদনের ব্যাকলগ দ্রুত শেষ করার দিকে মনোনিবেশ করায় বাবা-মা এবং দাদা-দাদির জন্য স্থায়ী বসবাসের স্পনসরশিপের নতুন আবেদন গ্রহণ করা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলো।

উল্লেখ্য কয়েক দশক ধরে কানাডায় স্থায়ী বাসিন্দারা বাবা-মা এবং দাদা-দাদি স্পনসরশিপ (পিজিপি) কর্মসূচির আওতায় স্থায়ী বসবাসের (পিআর) জন্য বাবা-মা এবং দাদা-দাদিকে দেশটিতে নেওয়ার জন্য স্পনসর করতে পারতেন। কিন্তু বহুল জনপ্রিয় এই সুযোগ আর থাকছে না।কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব (আইআরসিসি) বিভাগ এক ঘোষণায় বলেছে, তারা চলতি বছরে এই কর্মসূচির আওতায় আর নতুন কোনও আবেদন গ্রহণ করবে না। কানাডার সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে অনেক বাংলাদেশি পরিবারও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছেন।

বিষয়টি পরিষ্কার করে আইআরসিসি বলেছে, তারা ২০২৪ সালে জমা দেওয়া আবেদনগুলোর প্রক্রিয়াকরণ চালিয়ে যাবে। চলতি বছরে পিজিপি কর্মসূচির আওতায় কোনও নতুন আবেদন গ্রহণ করা হবে না। অতীতে এই কর্মসূচির আওতায় কানাডার স্থায়ী বাসিন্দারা দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য তাদের বাবা-মা এবং দাদা-দাদিকে নিয়ে যেতে পারতেন।এখন এর পরিবর্তে দেশটিতে বসবাসরত পরিবারগুলো সুপার ভিসা কর্মসূচিকে বিবেচনায় নিতে পারবেন। এই ভিসার আওতায় স্থায়ী বাসিন্দাদের আত্মীয়রা টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত কানাডায় বসবাসের অনুমতি পাবেন।

দেশটিতে অভিবাসীদের সংখ্যা হ্রাসের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আইআরসিসি নতুন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশটিতে ২০২৫ সালে পিআর বরাদ্দের হার ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি বছরের জন্য আইআরসিসির পিজিপি কর্মসূচির আওতায় ২৪ হাজার ৫০০ জনের আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আগামী কয়েক বছরে এই সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছে কানাডার অভিবাসন বিভাগ।

উল্লেখ্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবন যাবার যাত্রার মান বৃদ্ধি ব্যাংক ঋণের সুদের হার, বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির ফলে কানাডার অভিবাসন নীতি কঠোর হচ্ছে দিন দিন।ঐতিহাসিকভাবে অভিবাসী-বান্ধব নীতির জন্য পরিচিতি রয়েছে কানাডার। কিন্তু দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নেতৃত্বাধীন প্রশাসন দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে কানাডার এই নীতিতে পরিবর্তন এনেছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম কানাডা গেজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণ করায় চলতি বছরের মাঝেই ১২ লাখেরও বেশি অস্থায়ী বাসিন্দা কানাডা ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারেন।এ ছাড়াও বার্ষিক পিআর কোটা আগে ৫ লাখ নির্ধারিত থাকলেও চলতি বছরে তা কমিয়ে ৩ লাখ ৯৫ হাজার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই সংখ্যা ২০২৬ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৭ সালে ৩ লাখ ৬৫ হাজারে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।হ্রাসকৃত কোটার মাঝে ২০২৫ সালে কেবল ৯৪ হাজার ৫০০টি ভিসা পারিবারিক স্পনসরশিপের জন্য বরাদ্দ পাওয়ার কথা রয়েছে; যার মধ্যে ৭০ হাজার পিআর-ধারীদের স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/০৭ জানুয়ারি ২০২৫ /এমএম


এই বিভাগের আরও সংবাদ