Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌ বর্তমান লাইফস্টাইল এমন হয়েছে যে সকলের শরীরে লক্ষ্য করা যায় বাড়তি ওজন। কারণ বেশিরভাগ মানুষেরই রোজ নিয়ম করে বাইরে খাওয়া হয় যাতে থাকে অতিরিক্ত তেল মসলা। খাওয়া অনুযায়ী আবার শরীরিক পরিশ্রম হয় না, ঘুমের কোনো নিয়ম নেই। ফলাফল বাড়তি ওজন!

বাড়তি ওজন বা চর্বি যে দেহের সৌন্দর্যই শুধু নষ্ট করে তা নয় ওজনের সাথে সাথে যোগ হয় নানাধরণের শারিরীক সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হরমোনাল সমস্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি। তাই উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী আদর্শ ওজনে থাকা খুব বেশি প্রয়োজন। বাড়তি ওজন কমানোর জন্য অনেকে ব্যায়াম কিংবা জিমে জয়েন করে কিন্তু ওজন কমাতে ডায়েটের ভুমিকা ৭০% আর বাকি ৩০% ব্যায়াম ও অন্যান্য জীবনব্যবস্থায়৷ সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে ওজন কমাতে চাইলে সবার প্রথম খাবারে লাগাম টানতে হবে। প্রথমে নিজের উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন কত সেটা জানতে হবে। এরপর খাবার থেকে ধীরে ধীরে ক্যালরি কমাতে হবে। আমাদের দেশে কয়েক ধরণের ডায়েট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেইসব ডায়েট সম্পর্কে সঠিকভাবে না জেনে অনেকেই ডায়েট করে নিজের ক্ষতির কারণ ডেকে আনছে। তাই জেনে না যাক কয়েক ধরণের ডায়েটের নাম :

ইন্টারমিটেড ফাস্টিং
নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই ডায়েটে বেশকিছু সময় ফাস্টিং এ থাকতে হবে৷ এই ডায়েট নানারকম পদ্ধতি অনুসরণ করে করা হয় কিন্তু সাধারণ নিয়ম হচ্ছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮ ঘন্টা খাওয়াদাওয়া করতে হবে ও বাকি ১৬ ঘন্টা না খেয়ে থাকতে হবে৷ তবে অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগলে চিনি ছাড়া দুধ খাওয়া যাবে। যে সময় টুকু ফাস্টিং করা হবে সে সময় শরীরের জমাকৃত চর্বি ব্যয় করে শরীর শক্তিতে রূপান্তরিত করবে। তবে অনেকেই একটা ভুল করে তা হলো যে ৮ ঘন্টা খাওয়ার সময় সে সময় অতিরিক্ত ক্যালরি খাবার খেয়ে ফেলে৷ ফলে ফাস্টিং করার পরেও তেমন লাভ হয় না। তাই খাবারের সময় অবশ্যই কম ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতে হবে।

ওমাড ডায়েট
ওমাড ডায়েটকে ইন্টারমিটেড ফাস্টিং এর আরেক পদ্ধতিও বলা যেতে পারে। কিন্তু এই ডায়েটে শুধু একবেলা খাওয়া যায়৷ ২৪ ঘন্টার মধ্যেয় ১ ঘন্টা খাওয়াদাওয়া করে বাকি ২৩ ঘন্টা না খেয়ে থাকতে হবে৷ বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেসে চাইলে একবেলা নিজের যেকোনো পছন্দের ক্যালরি যুক্ত খাবার খেলেও সমস্যা হয় না। তবে কোনো বেলা খাওয়াদাওয়া করা যাবে তা নিজের উপর নির্ভর করছে৷ এ ডায়েট সবার জন্য প্রযোজ্য নয়।

ওজন কমানোর পাশাপাশি এই ডায়েট শরীরের অনেক ক্ষতি ও করে থাকে যেমন : স্থায়ী দুর্বলতা, ত্বকের নানাবিধ সমস্যা, চুল পড়ে যাওয়া, নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। কারণ এক ঘন্টা খাবার খেয়ে কখনোই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি নেয়া সম্ভব না৷ দীর্ঘদিন পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই এ ডায়েট অনুসরণ করতে চাইলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

কিটো ডায়েট
কিটো ডায়েটের নাম শোনেনি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল৷ এ ডায়েটে যেখানে শর্করার পরিমাণ কম ও চর্বির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কিটো ডায়েট করলে ৭০% চর্বির গ্রহণ করা লাগে৷ কিটো ডায়েট মূলত মৃগী রোগ বা এপিলেপসি রোগীদের দেয়া হতো। কিন্তু ওজন কমানোর জন্য এ ডায়েট এখন বেশ জনপ্রিয়৷ এ ডায়েটে শর্করার পরিমান খুবই কম নিতে হয় তবে যতটুকু শর্করা প্রয়োজন তা নিতে হয় শাক সবজি ও ফল থেকে৷ ভাত, আটা ও আলুর মতো শর্করা কিটো ডায়েটে খাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ৷ মুরগির মাংস, চর্বিহীন গরুর মাংস, মাছ, সামদ্রিক মাছ, ডিম, মাখন ঘি, পনির ইত্যাদি এ জাতীয় খাবার কিটো ডায়েটে খেতে হয়৷ তবে কিটো ডায়েটে অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণ করার কারণ কিডনিতে সমস্যা সহ নানাধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

প্রসাধনী কাজে লাগছে না? প্রসাধনী কাজে লাগছে না?
তবে মনে রাখতে হবে সব ধরণের ডায়েট সবার জন্য উপযোগী নয়। অনেক সময় বন্ধুদের কাউকে কোনো একটি ডায়েট করে ওজন কমাতে দেখে তা অনুসরণ করার চেষ্টা করি কিন্তু এতে লাভের জায়গায় ক্ষতিই বেশি হয়ে থাকে। এমন ডায়েট বেছে নিতে হবে যা যা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব। ডায়েটে অবশ্যই সুষম খাদ্য রাখতে হবে। কোনো ডায়েটে যাবার আগে নিজের শরীরের পরীক্ষা করে নেয়া উচিত যেমন ডায়াবেটিস বা কোনো হরমোনাল সমস্যা থাকলে বিশেষ ডায়েট প্রয়োজন।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ /এমএম


Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content