Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌  আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রতিটি শ্রেণির একজন করে শিক্ষার্থীর হাতে এক সেট করে বই তুলে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি। আজ সারা দেশে একযোগে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই উৎসব গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছে। আর প্রাথমিক পর্যায়ের বইয়ের কেন্দ্রীয় উৎসব হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। অনুষ্ঠানে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি, কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।এনসিটিবি সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যবই ছাপানোর কথা রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যবই প্রায় ১০ কোটি। বাকি ২৫ কোটি মাধ্যমিক ও অন্যান্য বিষয়ের বই রয়েছে।

ইতোমথ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮০ আর প্রাথমিকের ৬৫ শতাংশ বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে দাবি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি)। যদিও মুদ্রণ শিল্প সমিতির দাবি, ঘাটতির পরিমাণ এনসিটিবির হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।

সূত্র মতে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যেসব বই ছাপানো হয়েছে, সেগুলো মাঠপর্যায়ে (উপজেলা) চলে গেছে। এরপর ছাপানো বইগুলো ছাড়পত্র দিয়ে উপজেলা পর্যায়ের স্কুলগুলোয় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে ৮০ শতাংশ মাধ্যমিক আর ৬৫ শতাংশ প্রাথমিকের বই দিয়েই হবে এবারের বই উৎসব।

করোনার হানার আগে বছরের এই সময়টাতে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় শতভাগ বই পৌঁছে যেত উপজেলা পর্যায়ে। কিন্তু এবার নানামুখী সংকটের পাশাপাশি বই ছাপানোর কার্যাদেশ দিতে দেরি করায় ঠিক সময়ে শতভাগ পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ হয়নি। তারপরও উৎসব করেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে এনসিটিবি।

এবার প্রাথমিকের ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ২৪৫ এবং মাধ্যমিকে ২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৮টি বই ছাপানো হচ্ছে। কাগজ ও কালির সংকট, ভালো মানের মণ্ডের (পাল্প) সংকট, ঊর্ধ্বমুখী দাম, ছাপা সরঞ্জামের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, এনসিটিবির বইয়ের কার্যাদেশে দেরিসহ কয়েকটি কারণে এবার সময়মতো সব শিক্ষার্থীর হাতে মানসম্মত বই তুলে দেওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই সংকট কাটেনি। কাগজের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে মুদ্রণকারীদের চাওয়া অনুযায়ী ছাপার কাগজের উজ্জ্বলতায় ছাড় দিয়েছে এনসিটিবি। তাতে দু-একটি বাদে বাকি প্রেসগুলো নিম্নমানের কাগজে বই ছাপিয়েছে। কিন্তু এর পরও গতকাল পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে সব বই পাঠানো সম্ভব হয়নি।

এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, গত শুক্রবার পর্যন্ত মাধ্যমিকের মোট বইয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। ছাপা শেষে এসব বই মাঠ পর্যায়ের (উপজেলা) স্কুলগুলোতে পাঠানো হয়েছে। তবে ছাপার কাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় মাধ্যমিকের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছে প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ। প্রাথমিকে মোট বইয়ের ৬৫ শতাংশ ছাপার কাজ শেষে স্কুলগুলোতে পাঠানোর পর্যায়ে আছে। তবে এসব বই সব উপজেলাতে সমানভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাদের আশা, জানুয়ারির মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সব বই পাবেন।

মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, এনসিটিবি বেশি বেশি বই ছাপানোর তথ্য দিচ্ছে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে সেই সংখ্যক বই এখনো পৌঁছায়নি।এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘এনসিটিবি চেয়ারম্যান বেশি পিডিআই করে দেখিয়েছে যে, অধিকাংশ বই উপজেলা পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্তু তিনি দাবি করে তো লাভ নেই, উপজেলা পর্যায়ে গিয়ে সেই সংখ্যক বই দেখাতে পারবে না।’

জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘১ জানুয়ারির আগে প্রথম থেকে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির ৫০ শতাংশ আর অষ্টম-নবম শ্রেণির ৭৫ শতাংশ বই উপজেলা পর্যায়ে যাবে। ক্ষেত্রবিশেষে ১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত টেন্ডারের মেয়াদ আছে। সে ক্ষেত্রে ১ তারিখের আগে এনসিটিবি বই চাইবে কীভাবে!’বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘উৎসব করার জন্য প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে বই পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে এনসিটিবি।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০১ জানুয়ারি ২০২৩ /এমএম


এই বিভাগের আরও সংবাদ