Menu

এস এম আববাস: প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারস্বাভাবিক সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা এবং সাধারণ প্রশ্নোত্তর দেওয়ার মতো সামর্থ্য তৈরি করতে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ‘কমিউনিকেটিভ ইংলিশ’ শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রত্যেক প্রাথমিক শিক্ষককে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে

মনোযোগ সহকারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার তার নিজস্ব কার্যালয়ে একান্ত আলাপকালে এ কথা বলেন।
মন্ত্রী জানান, শিক্ষকরা নিজে যতটুকু ইংরেজি জানেন, ততটুকুই শেখাতে হবে। যদি শিক্ষকদের এ ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকে তবে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইংরেজিতে পড়তে ও লিখতে পারার পাশাপাশি ইংরেজিতে সাধারণ প্রশ্ন করা এবং উত্তর দেওয়ার মতো ইংরেজি শেখাতে পারা আমাদের শিক্ষকদের পক্ষে সম্ভব। তাই এটুকু শিক্ষকদের করতেই হবে।’
শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, ‘শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের চেয়ে এসএমসির (সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি) কমিটির সভাপতি হওয়াতে বেশি আগ্রহ দেখা যায়। কারণ সেখানে খবরদারি করা যাবে। কিন্তু, শিক্ষকদের বাইরে খবরদারি করার দরকার নেই। অন্য কোনও বিষয়ে সংশ্লিষ্ট না হয়ে তাদের ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষকরা এমন কোনও কাজ না করুক, যাতে শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়।’
শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্পর্কে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোয়ালিটি এডুকেশনের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছি। শিক্ষকরা যাতে পেশায় মনোযোগী হয় সে নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সচেতন এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষক সমিতিকে কোয়ালিটি এডুকেশন এবং কমুনিকেটিভ ইংলিশ শেখানোর বিষয়ে ইনভল্ব (সম্পৃক্ত) করতে চাচ্ছি। শুধু শিক্ষকরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে দর কষাকষি করবে আর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিয়ে দায়বদ্ধ হবে না, তা হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের একটা ভূমিকা রয়েছে। অভিভাবকদেরও আমরা কীভাবে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে পারি তা নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করছি।’
শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিল সারাদেশে চালু করার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিড-ডে মিল উন্নত করতে চাচ্ছি। শুধু একটি বিস্কুট খেয়ে মিড-ডে মিল চালু রাখা নয়, একটু ভারি খাবার দিতে চাই। তবে এটি শুধু সরকারের খরচ বাড়িয়ে নয়, স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করেই করতে হবে। সরকার টিফিন বাটি দিলে, নিশ্চয় বাড়ি থেকে অভিভাবকরা সামান্য খাবার দিতে পারবেন। সরকার যে ভাতা দিচ্ছে তার সঙ্গে অভিভাবকরা আর একটু যোগ করলেই ভারি মিড-ডে মিল দেওয়া সম্ভব।’
মিড-ডে মিল নিয়ে যেন কোনও এনজিও ব্যবসা করতে না পারে সে বিষয়ে সরকার সতর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এনজিওদের দেওয়ার জন্য এক শ্রেণির বিশেষজ্ঞ বলছেন, মিড-ডে মিলটা গরম হতে হবে, সবজি থাকতে হবে, মাঝে মাঝে ডিম বা অন্য কিছু থাকতে হবে। সারাদেশের প্রত্যেক শিশুকে মিড-ডে মিল সরকারের পক্ষ থেকে দিতে নানা কথা বলা হচ্ছে। এর কারণ সরকার না পেরে ছেড়ে দিলে এনজিওরা এটি চালাবে। তারা ব্যবসা করবে। কিন্তু, আমরা তা করতে দেবো না। স্থানীয়দের মাধ্যমে মিড-ডে মিল চালু রাখবো। আরও উন্নত করবো।’
আমি মনে করি সারাদেশে এক বছরের মধ্যে মিড-ডে মিল প্রতিটি স্কুলে চালু করা সম্ভব। স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ অন্যরা শিশুদের একটি করে টিফিন বাটি কিনে দিতে শুরু করেছেন। কারণ টিফিন বাটি শিশুটি বাসায় নিয়ে গেলে বাবা মা অলসতা না করে শিশুটির দুপুরের খাবারে জন্য কিছু না কিছু তৈরি করে দেবে। এমন একদিন আসবে সরকারের মিড-ডে মিল চালাতে হবে না।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের পর সারা দেশের কোথাও আর জরাজীর্ণ কোনও বিদ্যালয় থাকবে না।’
বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নত করা বিদ্যালয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে মোস্তাফজিুর রহমান বলেন, স্কুলগুলোতে ওয়াশ রুম করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষকদের সচেতনতা প্রয়োজন। স্থানীয়দেরও সহযোগিতা দরকার আছে। বিদ্যালয়ে শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা ভাবতে হবে শিক্ষকদেরই। অভিভাবকের পর বেশি সময় ধরে শিশুরা স্কুলেই থাকে। এ বিষয়টি শিক্ষকদের মনে রাখতে হবে।’