
বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: রাজধানীর আবাসিক এলাকাতেই একের পর এক গড়ে উঠছে অবৈধ শিল্প-কারখানা। নগরবাসী আবাসিক এলাকায় কারখানার অবাধ অবস্থানে অসহায় এই এলাকায় বসবাসকারীরা। ফলে বাধ্য হয়েই নগরবাসীর অনেককেই কারখানা ভবনে কিংবা এর আশপাশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করতে হচ্ছে। এতে শব্দ দূষণসহ নানা ধরনের দূষণের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
রাজধানীর গ্রীন রোডের আবাসিক এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দা খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার স্থায়ী আবাসিক বাড়িতে অফিস, ফ্যাক্টরি/কারখানা তৈরি করে ভাড়া দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আইন অমান্য করে খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদ দীর্ঘ দিন ধরে ১৯২ গ্রীন রোডের তার নিজস্ব বিল্ডিংয়ের ২য় তলায় অফিস ও ১৯৪/৬ এবং ১৯৪/৭ হোল্ডিং নম্বরে কারখানা ভাড়া দিয়ে আসছেন। এসব কারখানায় ইলেক্ট্রিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়। এসব কারখানা থেকে ভয়াবহ শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছে। ওই আবাসিক এলাকার স্থায়ী ও অস্থায়ী বাসিন্দরা। এমনকি আগুনসহ বড় কোনো দূঘর্টনাও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়াও কারখানার উচ্চ শব্দে বিশেষ করে শিশুদের শ্রবণশক্তি হ্রাস ও মানসিক বিকাশে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের পড়ালেখা ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসীর আরো অভিযোগ, কারখানার কতিপয় কর্মচারী এলাকায় ইভটিজিংসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা করে আসছে। একই সঙ্গে দিনে-রাতে মালামাল লোডিং এবং আনলোডিংয়ের জন্য ভ্যান গাড়ি ও পিকআপ ভ্যান রাখলে ওই রাস্তা দিয়ে গাডি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় পাশাপাশি মানুষের হেটে চলাফেরাতেও ব্যঘাত ঘটে। এ ছাড়াও, এ স্থানে মিষ্টি তৈরির কারখানা থাকায় কারখানা থেকে সৃষ্ট কালো ধোঁয়া এলাকাসীসহ পরিবেশের মারত্মক ক্ষতি করছে। অভিযুক্ত খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদের কাছে অনেক বার অভিযোগ করেও তিনি এ সমস্যার কোনো সমাধান না করে সাইন বোর্ড বিহীন কারখানা ভাড়ায় দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সরকার আবাসিক এলাকা থেকে কারখানা সরিয়ে নেয়ার নিদের্শ দিলেও অভিযুক্ত খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদ তার জায়গা থেকে কারখানা না সরিয়ে বরং সাইবোর্ড বিহীন কারখানা ভাড়ায় দিয়েছেন। এসব কারখানায় সকাল থেকে রাত্রী ৩টা পর্যন্ত কাজ চলে। কোনো প্রকার সরকারি ছুটির দিন এমনকি শুক্রবারেও এসব কারখানা বন্ধ থাকে না। দিন-রাত তারা কাজ চালিয়ে যায়। সারাদিনের কাজ শেষে ঘরে ফিরে আসা ক্লান্ত এলাকাবাসী কারখানার শব্দের কারণে ঠিকমত ঘুমাতেও পারে না। বাচ্চারা ঠিকমতো পড়ালেখাও করতে পারে না। এতে কারখানার আসেপাসের বসবাসকারী এলাকাবাসী দিন দিন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে।এ ছাড়াও, আগুন যদি কোনো কারণে লাগে তাহলে সেটার ভয়াবহতা কল্পনাও করা যাবে না।

তারা আরো বলেন, এসব কারখানা স্থাপনের জন্য যদি পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা রাজউক ছাড়পত্র দিয়ে থাকে তবে এলাকাসী হিসেবে আমাদের কিছু করারও নাই। এসব কারখানা যদি কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই তাদের অবৈধ্য কার্যক্রম পরিচালনা করে আসে তাহলে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই আবাসিক এলাকায় এসব অবৈধ্য কারখানাগুলো বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এসব কারখানাগুলো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে এরূপ শব্দ দূষণ, কালো ধোঁয়া ও চলাচলের অসুবিধার কারণে এলাকাবাসীকে নিজেদের পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও আশপাশে দোকানীরা জানান, একেবারে অবৈধভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে। এখনই যদি এ বিষয়টা সমাধান না করা যায় তবে ভবিষ্যতে এই কারখানা থেকে ভয়াবহ দূঘর্টনায় পড়বে এলাকার মানুষরা। এমনকি প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটতে পারে। এলাকাবাসীর অভিযোগে অভিযুক্ত খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদের মুঠোফোনে ফোন করা হলে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আবাসিক এলাকাতে কেন বা কিভাবে তিনি ফ্যাক্টরি/কারখানা হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন জানতে চেয়ে এসএমএস করা হয়েছে।
Array