Menu

আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: প্রচলিত পণ্যের বাইরে বাংলাদেশের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের চেয়েও বড় একটি বাজার তৈরি হয়েছে।বাংলাদেশ চাইলেই এই বাজারে পুরোটাই দখল করতে পারে। তার জন্যে বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারের নীতিগত সহায়তা বাড়াতে হবে।

কানাডায় কর্মরত বাংলাদেশি- কানাডীয়ান অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী- উদ্যোক্তারা নতুন এই বাজারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী এবং সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর এর সঞ্চালনায় টরন্টো সময় বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ’শওগাত আলী সাগর লাইভে’ তারা এই মতামত প্রকাশ করেন। স্থানীয় সরাসরি সম্প্রচারিত এই আলোচনায় অংশ নেন আলবার্টার এডমন্টন ম্যাকইউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রাফাত আলম, কানাডার মূলধারার বড় স্টোরগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের সরবরাহকারী শেখ সাদ আলম এবং নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা রাফি সাইয়িদ।

কানাডার লব ল, মেট্টো, নো ফ্রিল এর মতো বড় স্টোরগুলোতে বাংলাদেশি হিমায়িত এবং প্রক্রিয়াজাতকৃত পণ্যকে পরিচিত করে তোলা ব্যবসায়ী শেখ সাদ আলম আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, অভিবাসীর দেশ কানাডায় দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসী বাড়ছে। একই সঙ্গে মুসলিম দেশগুলো থেকেও রাজনৈতিক আশ্রয় এবং অভিবাসন নিয়ে কানাডায় আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে কানাডার মুলধারার স্টোরগুলো হালাল খাদ্য এবং দক্ষিণ এশিয় প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদসামগ্রীর চাহিদার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লব ল, মেট্টোর মতো স্টোরগুলো দক্ষিন এশিয় পন্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৬/৭ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে ওয়াল মার্ট, ডলার স্টোরগুলোও এই ধরনের পণ্যের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।ফলে তৈরি পোশাক বা চামড়াজাত পণ্যের বাইরে অপ্রচলিত পণ্যের বিশাল একটি বাজার তৈরি হয়েছে।

শেখ সাদ আলম বলেন, তিনি এখন কানাডার মুল ধারার স্টোরগুলোতে এই ধরনের পণ্য সরবরাহ করছেন।কিন্তু চাহিদামতো পণ্যের যোগান দিতে হলে আরো মানুষের সম্পৃক্ত হওয়া দরকার। তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরে কেবল বাংলাদেশি হিমায়িত এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সামগ্রীরই এক বিলিয়ন ডলারের একটি বাজার তৈরি করা সম্ভব।

অর্থনীতিবিদ ড. রাফাত আলম বলেন,বিশ্বের বিভিন্নদেশেই এথনিক ডায়াস্পোরার হাত ধরে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পণ্যের বাজার তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের বড় বড় কোম্পানিগুলোও বিভিন্নদেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপর ভিত্তি করেই তাদের পণ্য সামগ্রী সরবরাহ করেছে। তিনি বলেন, কানাডার জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশই ভিজিবল মাইনরিটি। তাদের প্রায় সবারই পছন্দের শর্ষে প্রক্রিয়াজাত বা হিমায়িত খাদ্যসামগ্রী। কানাডায় বাংলাদেশি অপ্রচলিত পণ্যের বাজার তৈরি হলে প্রতিবেশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও এখান থেকে পণ্য যাবে।

অর্থনীতিবিদ ড. রাফাত আলম বলেন, কানাডার বাজারে পণ্য নিয়ে ঢুকতে হলে অবশ্যই গুনগত মান, প্যাকেজিং এগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। কানাডীয়ানরা িএই ব্যাপারে খুবই সতর্ক। কানাডায় বাংলাদেশের অপ্রচলিত পণ্যের বিশাল সম্ভাবনাকে স্বীকার করে ড. রাফাত আলম এ ব্যাপারে সরকারকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন,সরকারি উদ্যোগ থাকলে কানাডার সরকার, নীতি নির্ধারক এবং ব্যবসায়ী সবাই আস্তা পাবে।

অর্থনীতিবিদ রাফাত আলম বলেন, আগামী কয়েক বছর পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থা থেকে বেরিয়ে যাবে। তার আগেই কানাডার বাজার দখরের জন্য প্রয়োজনীয় সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ নেয়া দরকার।

তরুন উদ্যোক্তা রাফি সাইয়িদ বলেন, কানাডায় বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়, তরুনরাও বাংলাদেশি ব্যাপারে আগ্রহী হচ্ছে। কানাডার মূলধারায় বাংলাদেশি পণ্যকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তরুন এই উদ্যোক্তা বলেন, গুনগত মান এবং উৎকর্ষতা নিশ্চিত করেই আমরা কানাডার বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ করছি। ফলে সামগ্রীকভাবে বাংলাদেশী পণ্য সামগ্রীর ব্যাপারে কানাডীয়ানদের আগ্রহ বাড়ছে।

নতুনদেশ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, কানাডার বাইরে আমেরিকা, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্নদেশ- যেখানেই বাংলাদেশিদের বসবাস, সেখানেই এই ধরনের অপ্রচলিত পণ্যের বাজার বিস্তৃতি পেতে পারে। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বাান জানান।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাকসহ বড় ধরনের পণ্য বরাবরই সরকারের কাছ থেকে বড় ধরনের সহায়তা পেয়েছে। এখন অপ্রচলিত ভোগ্যপণ্যের দিকেও নজর দেয়া দরকার।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/১৮ ডিসেম্বর ২০২০/এমএম


Array

এই বিভাগের আরও সংবাদ