Menu

আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: কানাডার আলবার্টা প্রদেশের প্রথম বাংলা অনলাইন “প্রবাস বাংলা ভয়েস” এর আয়োজনে প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল এর সঞ্চালনায় বাংলাদেশ সময় রোববার রাত দশটায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে “কোন পথে বাংলাদেশ?” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপি, বিদ্যুৎ, জালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য, এবং হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি, জাতীয় সংসদের শিল্প মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি।কানাডার আলবার্টা প্রদেশের আওয়ামী লীগের সভাপতি ড.জাফর সেলিম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী আবদুল্লা রফিক , সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাদির এবং উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান দিপু।

বক্তারা বলেন বাঙালি জাতি ও বঙ্গবন্ধু যেন এক অবিচ্ছেদ্য সত্তা।এই মেল বন্ধনই বঙ্গবন্ধুকে জেল-জুলুম ফাঁসির কাষ্ঠে সবকিছু তুচ্ছ করে কোটি বাঙালি কে স্বাধীনতার মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রেরণা জাগিয়েছিল। আর তাইতো বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির সংগ্রামে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা। আর এজন্যই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একান্তভাবেই অবিচ্ছেদ্য।

জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আবদুস শহীদ এমপি বলেন- ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাঙালি জাতির রাজনৈতিক যে ইতিহাস তা বাঙালি জাতিসত্ত্বার অভ্যুদয়ের ইতিহাস। মূলত এই ভূখণ্ডের মানুষ প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ পায় ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পাওয়া। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ভূমিকা এখন বিশ্বের বুকে প্রশংসনীয়।

এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি, বলেন- স্বাধীনতা ছিল বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ অর্জন, আর এ স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা সার্থক রূপকার স্থপতি ও অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে রোল মডেল।আজকের প্রযুক্তি, পরিবেশ যার ফলশ্রুতিতে আমরা ভার্চুয়াল আলোচনা করতে পারছি সেটাও প্রমাণ করে বাংলাদেশ আজ কোন পথে। তিনি বলেন প্রত্যেকটি উন্নয়নের পিছনে একটি পরিকল্পনা থাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সততা ও দক্ষতার সাথে আমরা সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে চলেছি। শতভাগ কার্যক্রম আজ সাফল্যের পথে। বাংলাদেশ তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলেছে।

মোঃ সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি বলেন, গ্রামের মানুষের পাশে থেকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা এগিয়ে চলেছি। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এখন বিদ্যুৎ রয়েছে। চোখের পলকেই প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রবাসে থেকেও আপনারা আমাদেরকে দেখতে পাচ্ছেন -আর এ সবই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ উদ্যোগে। শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাজ এগিয়ে চলেছে।বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বিশ্ববাসী আছে বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে আছে আমদানি-রপ্তানিতে ব্যাপক সাফল্য ঘটেছে।

কানাডার আলবার্টা প্রদেশের আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. জাফর সেলিম বলেন, দীর্ঘ নয় মাস ১৪ দিন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালী কারাগারে বন্দি ছিলেন, বন্দি অবস্থায় ও বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূঢ়। আজ বাংলাদেশের যে উন্নয়ন কর্মকান্ড তার ভিত্তি বঙ্গবন্ধুর হাতেই হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জানতো পুরো পরিবারটি ছিল বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের অংশ। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কোন নির্দিষ্ট দলের নন।বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাই তার দেখানো পথে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করে চলেছে । বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংগ্রাম ও সমৃদ্ধিতে দেদীপ্যমান দীপশিখা হয়ে বঙ্গবন্ধু আজীবন থাকবেন আমাদের হৃদয়ে।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল্লা রফিক বলেন – বঙ্গবন্ধু একটি বিশাল প্রতিষ্ঠান l যিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারক, ধর্মনিরপেক্ষ সাম্যবাদী সমাজবাবস্থার সূচনা করেছিলেন l তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ইতিহাস আমরা সবাই জানি l তিনি জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সোনার বাংলা গড়ার কিন্তূ দুৰ্ভাগ্যজনক ভাবে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় চক্রান্তের কাছে হার মেনে তিনি দৈহিক ভাবে প্রস্থান হয়েছেন এটা সত্য. তবে তাঁর আদর্শ বিদ্যমান l বাংলাদেশ তর তর করে এগিয়ে গেছে, যাচ্ছে এবং যাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে l

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাদির বলেন- ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট এর মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধুকে নিঃশেষ করতে পারেনি খুনিরা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সংহতির প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখনো তার জীবন, কর্ম ও বাণী দিয়ে জাতিকে শক্তি জুগিয়ে চলছেন। আমরা নিশ্চিত, অনাগত দিনগুলোতেও বঙ্গবন্ধু হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য অনি:শেষ বাতিঘর। আমরা দেখেছি যতই দিন যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ছায়া যেন ক্রমেই দীর্ঘতর হচ্ছে।

উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মোঃ মাহমুদ হাসান তার বক্তব্যে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহনকারী বিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ানদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু কেন পৃথিবীর যে কোন জাতীয়তাবাদী নেতা থেকে ব্যতিক্রমী অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত তা তুলে ধরেন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ভাবনা তুলে ধরে তিনি বলেন, জাতির জনকের সারা জীবনের সপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধ অর্থনীতির বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা। বিভিন্ন পরিসংখ্যান উল্লেখ করে অর্থনৈতিক সাফল্যের বিস্ময়কর উন্নতিতে সন্তোষ প্রকাশ করলে ও বৈষম্য দূরীকরণ ও দূর্নীতিকে টেকসই উন্নয়নে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন। নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, মাদকের অব্যাহত বিস্তার, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন প্রতিরোধের জন্য অারও কঠোরতা সহ সরকারের প্রতি নানামুখী গতিশীল বহুমাত্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর সুখী, সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পথকে কন্ঠকমুক্ত ভাবে তরান্বিত করার জন্য তিনি উদাত্ত আহবান জানান।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০/এমএম


Array

এই বিভাগের আরও সংবাদ