Menu

আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, বাংলা নিউজ :: কানাডায় এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৪২জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ১ হাজার ৩১০ জন আর সেরে উঠেছেন ১০ হাজার ৩২৮ জন। কানাডার আলবার্টার এডমেনটন, টরন্টো, মন্ট্রিয়ল এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় প্রবাসী বাঙ্গালীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে টরন্টোতে ইতিমধ্যে চারজনের মৃত্যুবরণ করেছেন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন অনেকেই। এখনো দশ-বারো জন বাংলাদেশি অসুস্থ হয়ে কেউ হাসপাতালে, কেউবা ঘরেই আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

যারা সুস্থ হয়ে ফিরেছেন, তাদের মধ্যে টরন্টোর আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী এবং টরন্টোতে ক্রীড়া অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত মুখ মইনুর রহমান ওরফে আজিজ। আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী , বয়স ৭৭ বছর। গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার কানিহাটি পরগনায়। বীর মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুস নিজ এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান।

তিনি দীর্ঘ নয় দিন হাসপাতালে ছিলেন। তার পূর্বে কাশি, শরীরে ব্যথা ও জ্বর নিয়ে প্রায় দু’সপ্তাহ বাসায় ছিলেন। শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে গেলে অক্সিজেন দিয়ে ভর্তি করে নেয়। পরে আইসিইউতে রাখা হয়। গত ৮ এপ্রিল সুস্থ হয়ে বাসায় আসেন।এখন নাকে সামান্য ব্যথা ও ড্রাই নৌজ, সামান্য কনস্টিপেশন ছাড়া তেমন কোনও সমস্যা নাই তবে খুবই দুর্বল এবং দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। অনলাইনে প্রতিদিন ডাক্তাররা মনিটরিং করছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও সপ্তাহ দুই লাগতে পারে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছে।

তার ভাষ্য, মানুষের অনেক ভুল ধারণা যে-বৃদ্ধরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়না। কিন্তু ৭৭ বয়স্ক আমি এখন মৃত্যুঞ্জয়ী। আর মৃত্যুকে ভয় পেলে কি চলবে? আমি তো ১৯৭১ সালেই শহীদ হয়ে যেতে পারতাম। কাজেই সাহস অর্জন করতে হবে। সতর্ক অবলম্বন করতে হবে। শরীরকে সুস্থ রাখতে হবে।তিনি আরো বলেন, করোনা নিয়ে নানান কুসংস্কার রয়েছে। করোনা হলে অনেকেই প্রকাশ করতে চান না। আবার দেশে বিভিন্ন হাতুড়ে ডাক্তার কিংবা কবিরাজের ঔষধ খান। তা ঠিক না। এজন্য সমাজ সচেতনার দরকার।

অন্যদিকে টরন্টোতে ক্রীড়া অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত মুখ মইনুর রহমান ওরফে আজিজ। হালকা কাশি এবং জ্বর নিয়ে গত ১৮ মার্চ স্কাভো হসপিটালে গেলে তার শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। কিন্তু তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করে বাসায় আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয় এবং অনলাইনে চলতে থাকে চিকিৎসা। প্রতিদিন হাসপাতাল থেকে ফোন করে ঔষধ, প্রেসক্রিপশন ও পরামর্শ দিয়ে খোঁজ খবর নিতো।

আজিজ হাসপাতালে না গিয়েই মনের জোরে এবং প্রতিটি নিয়ম মেনে কোয়ারেন্টাইনে থেকেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন। তার বাচ্চা এবং স্ত্রীও সতর্ক থেকে ভালো আছেন। অপর দিকে আজিজের ছোটভাই শরীফও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শরীফও সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।

আজিজ তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, করোনা হলেই যে মারা যাবে বা হাসপাতালে যেতেই হবে না কিন্তু না। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, পরামর্শ ১০০% মেনে চলে ১০০% সুস্থ হওয়া যায়; তার প্রমাণ আমি নিজে। কাজেই, আমার অনুরোধ-ভয়ের কোনো কারণ নেই। মনোবল, সাহস আর সতর্কতার সাথে এই করোনাকে মোকাবেলা করে আমি জয়ী হয়েছি। এখন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমাকে সুস্থতার সার্টিফিকেট দিয়েছে।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৮ এপ্রিল ২০২০/এমএম


Array

এই বিভাগের আরও সংবাদ