আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, বাংলা নিউজ :: কানাডায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কানাডায় এখন পর্যন্ত ১৪,৪২৬জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ২৫৮ জন আর সেরে উঠেছেন ২৬০৩ জন। কানাডার আলবার্টার এডমেনটন, টরন্টো, মন্ট্রিয়ল এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় প্রবাসী বাঙ্গালীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কানাডায় প্রায় এক লাখ বাংলাদেশিদের বসবাস করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কানাডার রাজধানী শহর অটোয়ায় মারা গেছেন বাংলাদেশি শরিয়ত উল্লাহ (৫৫)। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি কানাডিয়ান নাগরিক, যিনি প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় কুইন্সওয়ে কার্লটন হাসপাতালে মারা যান তিনি।
নিহতের পারিবারের সদস্যরা জানান, গত ২৭ মার্চ বিকেলে অসুস্থ অবস্থায় শরিয়ত উল্লাহকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় পাপাইয়া রেস্টুরেন্টে কাজ করার সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে প্রায় এক সপ্তাহ থাকার পর তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শেষে গতকাল শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়।
স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ছিল শরিয়ত উল্লাহর সংসার। বাংলাদেশের ফেনী জেলার সন্তান নিহত শরিয়ত উল্লাহর দু ভাই কানাডার মন্ট্রিয়েল ও অটোয়া শহরে থাকেন। নিহতের জানাজা কিংবা দাফনের ব্যাপারে এখনো কিছু জানা যায়নি। শরিয়ত উল্লাহর মৃত্যুতে কানাডার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের পাশাপাশি বেড়েছে উদ্বেগ।এদিকে গতকাল টরন্টোর এক হাসপাতালে মারা গেছেন মৌলভীবাজার জেলা অ্যাসোসিয়েশন, টরন্টোর উপদেষ্টা আব্দুল বাছিত।টরন্টোর বাঙালি অধ্যুষিত ড্যানফোর্থ এলাকায় এখন আর সেই ভিড় নেই। গ্রোসারি দোকানগুলোতে মানুষের উপস্থিতি নেহাত কম। পার্শ্ববতী পেট্রল পাম্প কফি শপে কোভিড-১৯ পজিটিভ ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ায় বন্ধ করা হয়েছে পাম্প।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন বাঙালি কমিউনিটির পরিচিত মুখ বীর মুক্তিযোদ্ধা, গ্রেটার ফরিদপুর জেলা অ্যাসোসিয়েশন অব কানাডার সভাপতি সালাম শরীফ ও সমাজকর্মী তুতিউর রহমান। সরকারি নানা সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকেরা নানাভাবে করোনা মোকাবিলায় সচেতনতা ও সহযোগিতামূলক কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
বিমানবন্দরগুলো ফাঁকা, বাস-ট্রেনে লোক নেই, গাড়ীর দেশ কানাডার রাস্তায় হাতেগোনা দুচারখানা গাড়ী, বিশাল সব শপিং মলগুলো কোথাও কোথাও খোলা থাকলেও খরিদ্দারের আনাগোনা নেই মোটেই। ব্যবসায়িক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক সব ধরনের সমাবেশ বন্ধ। আমেরিকার সাথে বর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে ফেডারেল সরকার। দেশটির সব থেকে বড় এবং ব্যস্ততম শহর টরন্টো যেন এক মৃত নগরী, পর্যটকদের পদধ্বনি শোনা যায় না। চারিদিকে শুধু নীরবতা।
কানাডায় প্রবাসী বাঙালিরা একে অপরের সহযোগিতা এগিয়ে আসছে। কমিউনিটি লিডাররা খবর নিচ্ছেন, ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সচেতন করছেন সবাইকে। ক্যালগেরির কিছু কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় গ্রোসারির ষ্টলগুলো ব্যস্ত রয়েছে প্রবাসী বাঙ্গালীদের ঘরে ডেলিভারি অর্ডার পৌঁছে দিতে।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০৫ এপ্রিল ২০২০/এমএম