বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: বঙ্গবন্ধু তাঁর দেশের জনগণকে বিশেষ করে শিশুদের গভীরভাবে ভালোবাসতেন। জাতির পিতার জন্মদিন সব শিশুর জন্যই একটি আনন্দের দিন। আর এ জন্যই এ দিনটি আমাদের জাতীয় শিশু দিবস।
কানাডার রাজধানী অটোয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এই মন্তব্য করেন। তিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিশুসহ সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলা, রাজনৈতিক জীবন, মতাদর্শ ও অসাধারণ ব্যক্তিত্বের কথা তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
কানাডার বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করেছে। মহান এ দিবসটি উদ্যাপনের লক্ষ্যে হাইকমিশন ১৭ মার্চ রোববার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল হাইকমিশন মিলনায়তনে বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ ও ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাযুদ্ধ’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন এবং ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অনেক শিশু–কিশোর স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে কানাডা সফররত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান। সঞ্চালনা করেন হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরী।
কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা হয় বিকেল ৫টায়। প্রথমেই শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে মাশরুর মাহিন কবির, উল্লাস, আলিসিয়া, ওয়াজেদ। নৃত্য পরিবেশন করে অঙ্কিত পাল চৌধুরী। পরবর্তী সময়ে হাইকমিশনের কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী, স্থানীয় শিল্পী ডালিয়া ইয়াসমিন, অং সুয়ে থোয়াই ও নার্গিস আরা রুবি সংগীত পরিবেশন করেন। তবলায় সহযোগিতা করেন শুভংকর পণ্ডিত।
অনুষ্ঠানে এ দিবস উপলক্ষে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিয়া মো. মাইনুল কবির, মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, কাউন্সেলর (বাণিজ্যিক) মো. শাকিল মাহমুদ ও প্রথম সচিব অপর্ণা রানী পাল।
পরবর্তী সময়ে কিশোর বক্তা আরীব সাইফুদ্দিনের বক্তৃতার মাধ্যমে শুরু হওয়া আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শহিদ রহমান, ফণীন্দ্র কুমার ভট্টাচার্য, জিয়াউল হক জিয়া, মাসুদ সিদ্দিকী, সোমা সাইফুদ্দিন, রাশেদা নেওয়াজ, ওমর শরীফ শের, সিকদার মতিয়ার রহমান ও গোলাম মুহিবুর রহমান প্রমুখ। তাঁরা জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবন ও অবদান এবং বর্তমান সরকারের সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে হাইকমিশনার মিজানুর রহমান জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর মহৎ জীবন, কর্ম ও স্বপ্নের সোনার বাংলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকে নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালির এক অবিসংবাদিত মহান নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধু অসীম সাহসিকতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা পোষণ করতেন। তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি বাংলাদেশ-কানাডা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এ সম্পর্ককে আরও জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান অতিথি রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু–কিশোরদের হাতে সনদ ও পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনার ও তাঁর পত্নী নিশাত রহমান।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/২২ মার্চ ২০১৯/ইএন