প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: আজকের দিনে ডায়াবেটিস সবচেয়ে সাধারণ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলোর একটি। এই সাধারণ রোগীই একসময় জটিল রোগে পরিণত হয়।সে কারণে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং ওষুধের পাশাপাশি কিছু ভেষজ উপাদানও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর এটি একবার হলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে নিয়ম পালন করে যেতে হয়। এর উপযুক্ত সমাধান হচ্ছে— নিয়মিত ব্যায়াম, সময়মতো খাবার, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।সুতরাং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করতে পারে হলুদ। আর এই হলুদ শুধু রান্নার স্বাদ ও রং বাড়িয়ে তুলে না; বরং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসায় ওষুধ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
হলুদ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে প্রধানত এর সক্রিয় উপাদান কারকিউমিনের কারণে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিনের কিছু বৈশিষ্ট্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে এবং ডায়াবেটিস-সম্পর্কিত জটিলতা কমাতে সহায়ক হতে পারে।শুরু থেকেই রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। ডায়াবেটিসের সমস্যাকে কখনই পুরোপুরিভাবে নিরাময় করা সম্ভব হয় না। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অসুস্থতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ডায়াবেটিস মানেই ভয়, এই বুঝি রক্তে শর্করা বেড়ে গেল। আয়ুর্বেদ বলে, ডায়াবেটিস বা মধুমেহকে নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁচাহলুদ হলো মহৌষধ। রোজ সকালে এক টুকরো কাঁচাহলুদ খেলে রক্তে শর্করা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
শুধু আয়ুর্বেদেই নয়, ইউনিভার্সিটি অব নিউক্যাসলের নিউট্রাসিউটিক্যাল রিসার্চ গ্রুপের বিজ্ঞানীরাও তাদের গবেষণায় দাবি করেছেন, হলুদ খেলে কমতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিস। হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে বড় ভূমিকা নেয়।এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেন, প্রতিদিন সকালে এক টুকরো কাঁচাহলুদ, আখের গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খান। এতে রক্তে শর্করা যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তেমনই ক্যানসারের ঝুঁকিও কমবে। আর কাঁচাহলুদ ও নিমপাতা সমানভাবে নিয়ে দুই কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে নিন। পর দিন সকালে খেতে হবে। এতেও ভালো কাজ হয়।
হলুদের কারকিউমিন যৌগ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত সকালে এক টুকরো কাঁচাহলুদ খেলে হজমশক্তি বাড়ে। খাদ্যনালির যে কোনো সংক্রমণ ঠেকাতে পারে হলুদ। পাশাপাশি বদহজম, পেটের গোলমালও সারাতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে আরও অনেক রকম অসুস্থতা দেখা দিতে থাকে। সেসবের মোকাবিলাও করতে পারে হলুদ।‘ডায়াবেটিস কেয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কারকিউমিন সাপ্লিমেন্ট প্রি-ডায়াবেটিস ব্যক্তিদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে।
হলুদের মূল উপাদান কারকিউমিন। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে— কারকিউমিন রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে যে প্রদাহ ও কোষের ক্ষতি হয়, কারকিউমিন তা হ্রাস করতে সহায়ক।দীর্ঘ মেয়াদে কারকিউমিন ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা, যেমন স্নায়ুর ক্ষতি, হৃদ্রোগ, কিডনির ক্ষতি ইত্যাদি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ /এমএম