প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: স্কুলে ভর্তির ডিজিটাল লটারিতে আবেদনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীর জন্মসনদ ও অন্যান্য তথ্য গোপন করে একই প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার আবেদনের অভিযোগও রয়েছে। এসব জালিয়াতির তথ্য সামনের আসার পর নড়েচড়ে বসেছে ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটি। ইতোমধ্যে এ ধরনের জালিয়াতিতে জড়িত বেশ কিছু আবেদনকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অনিয়মে আশ্রয় নেওয়া আবেদনগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি লটারি অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার থেকে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়। এতে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় এক ছাত্রীর তিনবার মেধাতালিকায় সুযোগ পাওয়ার ঘটনা তদন্তে সামনে এসেছে অভিনব অনেক জালিয়াতির তথ্য। এছাড়া আবেদন প্রক্রিয়াটি টেলিটকের মাধ্যমে সম্পন্ন হওয়ায় আইডিয়াল স্কুলের ঘটনাটি তাদের তদন্ত করার নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।তদন্তে দেখা গেছে, ওই ছাত্রীর একই জন্মসনদ দিয়ে বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন করে মোট ৩০ বার আবেদন করা হয়েছে। একেক আবেদনে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়। এতে আবেদন প্রক্রিয়ার দুর্বলতায় ওই ছাত্রী তিনবার ভর্তির সুযোগ পায়।
স্কুলে ভর্তির ডিজিটাল লটারির ফলাফলে দেখা গেছে, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার দ্বিতীয় শ্রেণিতে মর্নিং শিফটে ইংলিশ ভার্সনের এক শিক্ষার্থীকে মেধাতালিকায় দুবার রাখা হয়েছে। এছাড়া একই শ্রেণির বাংলা ভার্সনের মর্নিং শিফটেও ওই শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় রয়েছে। সাধারণ কোটায় ওই শিক্ষার্থী ৯৬তম হয়েছে। একই শ্রেণিতে ইংলিশ ভার্সনের মর্নিং শিফটে সে সাধারণ কোটায় ১৫ ও ১৯তম স্থানে রয়েছে। সব জায়গায় তার একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। বাবা-মায়ের নামও একই। তবে তিন জায়গায় তিনটি ভিন্ন মোবাইল নম্বর রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন নম্বরও ভিন্ন।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা মো. রুবেলের সঙ্গে কথা বলেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার সন্তানের জন্য দুই শিফটে দুটি আবেদন করেছেন বলে তিনি স্বীকার করেছেন। এছাড়া যারা এমন অসদুপায় অবলম্বন করেছে তারা ভর্তির সুযোগ পাবে না বলেও জানিয়েছে ভর্তি কমিটি।এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল যুগান্তরকে বলেন, স্কুলে ভর্তির আবেদনে কোনো অনিয়ম থাকলে, সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। যাদের এসব অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যাবে, তাদের ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।
এদিকে মাউশি জানিয়েছে, ভর্তিকালীন নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করতে হবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র যাচাইকালীন শিক্ষার্থীর জন্মসনদের মূল কপি, জন্মসনদের অনলাইন কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাই করতে হবে), বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি ভালো করে দেখতে হবে। মিথ্যা তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে কোনো শিক্ষার্থী নির্বাচিত হলে (যাচাইসাপেক্ষে) তাকে ভর্তি করা যাবে না।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ /এমএম