Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা। শনিবার নিজের অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন, আব্বু ফোন করে জিজ্ঞেস করল- ‘তোমার ইউনিভার্সিটির কী অবস্থা?’ আমি বললাম- ‘ক্লাস-পরীক্ষা সব বন্ধ। পোলাপান এখন শুধু রাতে ঘুমায় আর দিনে শাহবাগ অবরোধ করে।’

আন্দোলনের অনুভূতি বর্ণনা করে উমামা ফাতেমা লেখেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়কে এতটা জীবন্ত আমি বিগত ৬ বছরে দেখিনি। এতটা ঐক্য! এতটা ভ্রাতৃত্ব! আন্দোলন একটা উৎসব। মিছিল যেন আমাদের সবার মিলনমেলা। যখন ৪-৫ হাজার মানুষ একসঙ্গে মিছিল করি তখন মনে হয় সবকিছুই সম্ভব! রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের অনেকের জ্বর চলে আসে। আমাদের সবার জয়েন্টে ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, হাঁটু ব্যথা, কিন্তু মনটাকে মিছিলে যাওয়া থেকে আটকাতে পারি না। যখন হাজারও কণ্ঠে স্লোগান ধরি তখন সব ব্যথা দূর হয়ে যায়, মনে হয় এতটা জীবন্ত অনুভব করিনি আগে কখনো।’

ঢাবির এই ছাত্রী আরও লিখেছেন, আমরা সবাই বুঝতে পারছি, সরকার কোটা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে আমাদের আন্দোলনকে ঝুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমরা যে কতটা ঐক্যবদ্ধ, কতটা উৎসবমুখর আর কতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তা সরকার জানে না। এ আন্দোলনের স্পিরিট দেখলেই বোঝা যায়, কোটাব্যবস্থা বহাল রাখা সম্ভব না। সফলতা শুধুই আজকের আর কালকের ব্যাপার।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে রোববার ঢাকার বিভিন্ন সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব এলাকা অবরোধ করে রেখেছিল। ইডেন মহিলা করেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করে রাখেন। রোববার রাত আটটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় থেকে নতুন করে ‘এক দফা’ ঘোষণা করে রোববারের মতো আন্দোলন শেষ করেছেন। সোমবার ফের ‘ব্লকেড’ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন। ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০৮ জুলাই ২০২৪ /এমএম