প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: কেনাকাটার সময় বিকাশ অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে অ্যাপ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ধার নেওয়া যাবে। সাত দিনের মধ্যে ওই টাকা পরিশোধ করলে গ্রাহককে বাড়তি কোনো খরচ দিতে হবে না। ফলে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পণ্য কেনাকাটা ও বিভিন্ন সেবার খরচ পরিশোধের প্রক্রিয়া আরও সহজ হলো। সিটি ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে ‘পে-লেটার’ নামের নতুন একটি ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ সেবা চালু করেছে বিকাশ। এই সেবার মাধ্যমেই বিশেষ এই ঋণ নেওয়া যাবে। আর শুধু পণ্য কেনাকাটা নয়, বিভিন্ন সেবা (যেমন হাসপাতাল, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ভ্রমণ বা পারলার বিল প্রভৃতি) গ্রহণের সময় মার্চেন্ট বিল পরিশোধে এ ঋণ নেওয়া যাবে। মোটকথা, যেখানেই বিকাশের মার্চেন্ট পেমেন্টের সুবিধা রয়েছে, সেখানেই ‘পে-লেটার’–এর মাধ্যমে ঋণ নেওয়া যাবে।
বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। মনে করুন, আপনি কোনো দোকানে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করলেন। এরপর বিকাশ অ্যাপে বিল পরিশোধের সময় দেখলেন আপনার কাছে পর্যাপ্ত টাকা নেই; আরও হাজারখানেক টাকা লাগবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই। বিকাশের চালু করা ‘পে-লেটার’ সেবার মাধ্যমে এক হাজার টাকাসহ মোট বিল পরিশোধ করে দিতে পারবেন। অর্থাৎ বিকাশ থেকে অনেকটা ধার বা ঋণ করার মতো বিষয় এটি। অন্য অর্থে বলা যায়, বিকাশ এ ক্ষেত্রে একধরনের ভার্চ্যুয়াল ক্রেডিট কার্ড হিসেবে কাজ করবে। নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত—সব ধরনের বিকাশ গ্রাহকই এ সেবা নিতে পারবেন। তবে শর্ত হচ্ছে, সেবা গ্রহণের আগে গ্রাহককে ঋণ পাওয়ার উপযোগী হিসেবে বিবেচিত হতে হবে।
গ্রাহকের বিকাশ লেনদেন ও সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসির ভিত্তিতে ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা ও ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত হবে। এই সেবার আওতাভুক্ত হতে গ্রাহককে অবশ্যই বিকাশে ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে নিবন্ধিত হতে হবে। গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ থেকে তথ্য হালনাগাদের মাধ্যমে ই-কেওয়াইসি গ্রাহক হিসেবে নিবন্ধন হালনাগাদ করে নিতে পারবেন। ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা সাপেক্ষে ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ বা পে-লেটার সেবার মাধ্যমে গ্রাহককে ৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত সমন্বিত ঋণসীমা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা তাৎক্ষণিকভাবে পে-লেটার বা ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ কিংবা উভয় সেবাই নিতে পারবেন।
কেনাকাটা বা বিল পরিশোধের সময় পে-লেটার সেবা নিতে বিকাশ অ্যাপে কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। প্রথমেই গ্রাহক তাঁর প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবা নিয়ে বিকাশ অ্যাপে মার্চেন্টের কিউআর কোড স্ক্যান করার পর অথবা পেমেন্ট অপশনে সরাসরি মার্চেন্ট নম্বর বসিয়ে টাকার পরিমাণ লিখবেন। এরপর পে-লেটার অপশনটি নির্বাচন করবেন। পরবর্তী স্ক্রিনে তাকে সাত দিনে সুদবিহীন পরিশোধ অথবা তিন বা ছয় মাসে পরিশোধের যেকোনো একটি পদ্ধতি নির্বাচন করতে হবে। সাত দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে দিলে কোনো সুদ দিতে হবে না। তবে সাত দিনে সুদবিহীন পরিশোধ পদ্ধতিতে গ্রাহক যদি সপ্তম দিনের মধ্যে ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ না করতে পারেন, তাহলে পে-লেটার সেবা তিন মাসের ক্ষুদ্রঋণে পরিণত হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে বার্ষিক ৯ শতাংশ সুদ দিতে হবে।
অন্যদিকে ছয় মাসে পে-লেটার ঋণ পরিশোধ পদ্ধতিতে গ্রাহককে শুরুতে ২০ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিতে হবে। বাকি ৮০ শতাংশ অর্থ পে-লেটারের মাধ্যমে সমান কিস্তিতে ভাগ হয়ে প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রেও বার্ষিক ৯ শতাংশ সুদ প্রযোজ্য হবে। উভয় ক্ষেত্রেই শূন্য দশমিক ৫৭৫ শতাংশ ভ্যাট ও পরিষেবা মাশুল যুক্ত হবে। একজন ঋণগ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারেন; তখন তাকে শুধু সেই কয়েক দিনের জন্যই সুদ দিতে হবে। অগ্রিম ঋণ নিষ্পত্তিতে বাড়তি খরচ হবে না। ঋণগ্রহীতাদের নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০২ এপ্রিল ২০২৪ /এমএম