প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্ক কালী মন্দির সোসাইটি এবং আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা সংস্কৃতি সমিতির যৌথ উদ্যোগে পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। চিত্তরঞ্জন পার্ক কালীমন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ। নতুন প্রজন্মের ছাত্রী উষ্ণী দাশগুপ্ত মূল অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ‘মোদের গরব মোদের আশা’ এই বিখ্যাত গানটি গেয়ে। এ সময় অন্যতম অতিথির মধ্যে ছিলেন- দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভারতীয় ভাষা বিভাগের বাংলার অধ্যাপক ড.অগ্নিভ ঘোষ, কালীবাড়ির সচিব শ্রী প্রদীপ মজুমদার ও সভাপতি ড. শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের মূল পর্বে প্রথমেই সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ড. শ্রীমতী চক্রবর্তী সব অতিথি ও উপস্থিত দর্শকদের স্বাগত জানান। পরে তিনি বাংলা ভাষার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্তব্য বিষয়ে স্মরণ করান। এরপর কালীবাড়ি সোসাইটির সচিব শ্রী প্রদীপ মজুমদার বাংলা ভাষার বর্তমান সঙ্কটগুলোর কথা তুলে ধরেন। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যাতে আরও বেশি করে এগিয়ে আসে তাদের মাতৃভাষা শিক্ষার জন্য, সে ব্যাপারে সচেতন করেন।
প্রধান অতিথি শাবান মাহমুদ বলেন, ১৯৫২ ছাড়াও ১৯৬১ এবং ১৯৬৬-তে বাংলাদেশে ভাষা নিয়ে নানা আন্দোলন হয়েছে। বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে কঠিন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। এ ব্যাপারে ভারত সবসময়ই আমাদের দেশের পাশে ছিল। তিনি বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথাও বলেন। হাসিনা কতটা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যেপ্রেমী, সেকথা উল্লেখ করেন। বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসার বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী সবরকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি। পরে কালী মন্দির সোসাইটির সোসাইটির সভাপতি ড. শীর্ষেন্দু মুখার্জি বলেন, স্কুলে সুযোগ না পেলেও অভিভাবকরা যাতে বাড়িতে ছেলেমেয়েদের ভাষা শিক্ষার সুযোগ করে দেন। অনেক ক্লাব বা সমিতিতেও এই সুযোগ পাওয়া যায়। কালীবাড়িতেও নিয়মিত বাংলা শেখার ক্লাস হয়ে আসছে। এ ব্যাপারে যে কোনো সাহায্য দিতে সোসাইটি প্রস্তুত।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাকির হুসেন কলেজের অধ্যাপিকা ড. শর্মিষ্ঠা সেন প্রথমেই আবৃত্তি করেন কবি শামসুর রহমানের কবিতা ‘বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে’ এবং কবি আর্যতীর্থের একটি কবিতা। কিশোরী রিমা রায় একটি লোকনৃত্য পরিবেশন করেন। এই পর্বের মূল আকর্ষণ ছিল মিহির বসু পরিচালিত ভাষা দিবসের ওপর কয়েকটি সম্মিলিত গান এবং অরুণাভ ধর পরিচালিত ‘ক্রিয়েশন’ গ্রুপের নাচ। গান এবং নাচের সুন্দর আবহে অনুষ্ঠান পরিপূর্ণতা পায়। এছাড়া বক্তব্য দেন, জাকির হোসেন কলেজের ছাত্র রাজেশ মিশ্র, সবশেষ বক্তা ছিলেন বিশেষ অতিথি ড. অগ্নিভ ঘোষ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অবদানের জন্য শাবান মাহমুদের হাতে মৃণাল কান্তি রায়, অনিতা হালদার এবং নবনীতা চ্যাটার্জিকে স্মারক দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ /এমএম