প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: একবছর ধরে বাজারে কার্যত স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। সদ্য গত শীত মৌসুমে সবজির দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি ছিল। এর মধ্যে চাল ডাল, তেল, মাছ মাংসসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম এখন শুধু স্বল্প আয়ের মানুষ নয়, মধ্যবিত্তেরও সামর্থ্যের মধ্যে নেই। বাজারে গেলেই হতাশা বাড়ে মানুষের মধ্যে। এবস্থায় বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
বাজারে গেলেই সবকিছু অন্ধকার লাগে। ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে কিনেছি ২১০ টাকায়। এর আগে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়ও কিনেছি। কিন্তু আজ ২৫০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। এই এক বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড করে ফেলেছে ব্রয়লার মুরগি। আবার সামনে রমজান মাস তখনতো ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম আরও বাড়াবে। এরকম চলতে থাকলে তো বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রামপুরা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. মিসবাহ্।
রাজধানীর বাজারে মাছ, মাংস, মুরগি, ডিমসহ সবকিছুর আকাশ ছোঁয়া দামের কথা উল্লেখ করে মিসবাহ্ বলেন, ‘আমার মতো মধ্যবিত্তরা মহাবিপদের মধ্যে আছে। গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৪৫ টাকায় কিনলেও আজকে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ’
শুক্রবার সরজমিনে ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তানি মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা বিক্রি হলেও আজ ৩৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস সাত দিনের ব্যবধানে ৯৫০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ১০০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা কাঁচাবাজার এলাকার ক্রেতা আপ্তাব উদ্দিন বলেন, ‘ঢেঁঢ়স ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রায় দেড় মাস আগে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। এতোদিনে ৭০ থেকে ৯০ টাকা বেড়েছে। এরকম চলতে থাকলে আমাদের দেশের মানুষের জন্য খুবই দুঃখজনক।’
এছাড়া বাজারে কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা, বেগুনের কেজি ৭০ টাকা ছিল কিন্তু আজ ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, নতুন আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গোল বেগুন ৫০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া সিমের কেজি ৫০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, করলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, লাল বগুড়ার লাল আলু ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, প্রতিটি বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, লাউ আকার ভেদে ৭০ থেকে ১২০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ৫ টাকা বেড়ে ১৫ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, লেবু হালিপ্রতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২২০ টাকা, টাকি মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কই ২৫০ টাকা, রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাঁচকি মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, বোয়াল আকার ভেদে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, টেংরা ৪০০ টাকা, কাতল ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙ্গাশ ৬০০ টাকা, চিংড়ি আকার ভেদে ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, রূপচাঁদা আকার ভেদে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা, ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা কেজি, ইন্ডিয়ান রসুন ২২০ টাকা, দেশি রসুন ১৬০ টাকা, দেশি আদা ১৬০, ইন্ডিয়ান আদা ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে আটাশ চালের দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০ টাকা, আতপ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ক্রেতা জনি কর্মকার বলেন, ‘হাঁসের এক হালি ডিমের দামে এক কেজি চাল কেনা যাবে। হাঁসের ডিমের হালি ৭০ টাকা এবং ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ /এমএম





