প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাং-এ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মালয়েশিয়া বিএনপি’র কমিটি পরিচিতি সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী শামা আক্তার আনিকা মাহিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনায় প্রবাসী বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন মালয়েশিয়া বিএনপি’র সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান বাদল। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী মো. মনির খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা সালাউদ্দিন, সহ-সভাপতি এস এম রহমান (তনু), আব্দুল জলিল লিটন, দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাহউদ্দিনসহ যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রবাসী বিএনপি সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন, গুম ও হত্যাকাণ্ডে শামা আক্তার আনিকা মাহির প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল। শেখ হাসিনার পতনের পর গত ৫ আগস্ট তিনি মালয়েশিয়ায় পালিয়ে আসেন। অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি প্রকাশ পাওয়ার পরপরই প্রবাসীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।মালয়েশিয়া বিএনপি’র কিছু নেতা যুক্তি দিয়েছেন, এটি একটি সাংস্কৃতিক পর্ব হওয়ায় আনিকার উপস্থিতি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এই যুক্তি প্রবাসীদের ক্ষোভ প্রশমনে ব্যর্থ হয়েছে। প্রবাসীদের অভিযোগ, মালয়েশিয়া বিএনপি’র কমিটি ইতিমধ্যেই নানা বিতর্কে জড়িয়েছে। তারা দাবি করেন, দুঃসময়ে অনুপস্থিত থাকা এবং গত ১৫ বছর দলের কোনো কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়া ব্যক্তিরা অর্থের বিনিময়ে পদ পেয়েছেন।
এ ছাড়া, প্রবাসী নেতারা অভিযোগ করেছেন, অতীতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকা অনেকে এখন বিএনপি’র নেতৃত্বে চলে এসেছেন। এতে মালয়েশিয়া বিএনপি’র কমিটি দলকে শক্তিশালী করছে, নাকি পরিকল্পিতভাবে দুর্বল করছে—এমন প্রশ্ন উঠেছে।মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি আগামী জাতীয় নির্বাচনে পোস্টাল ভোটের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি ও জামায়াতের কার্যক্রম বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। তবে এ ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিএনপি’র ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রবাসীরা।
মালয়েশিয়া বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, “আমাদের কর্মীরা সচেতন নয়। ভোটের গুরুত্ব বোঝাতে হাইকমান্ডকে এগিয়ে আসতে হবে।” সহ-সভাপতি তালহা মাহমুদ বলেন, “সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম উপেক্ষিত হচ্ছে।”প্রবাসী বিএনপি সমর্থকরা এই বক্তব্যকে “হাস্যকর ও হতাশাজনক” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের নেত্রীকে মঞ্চে আনা থেকে শুরু করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদ প্রদান—সবই প্রমাণ করে যে মালয়েশিয়া বিএনপি পরিকল্পিতভাবে নিজেদের বিতর্কের ফাঁদে ফেলছে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০১ অক্টোবর ২০২৫ /এমএম