Menu

নারীদের দক্ষতা আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করতে প্রকল্প শুরু করেছে কোডারসট্রাস্ট

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: নারীদের দক্ষতা আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করতে প্রকল্প শুরু করেছে কোডারসট্রাস্ট ‘ফ্রিল্যান্সিং জগতে নারীদের দক্ষতা বিকাশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকতথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশি নারীদের দক্ষতা বিকাশ ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করে দিতে একটি প্রকল্প শুরু করেছে বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোডারসট্রাস্ট।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে এক হাজার সুবিধাবঞ্চিত নারীকে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বিনামূল্যে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান করা হবে।বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘ফ্রিল্যান্সিং জগতে নারীদের দক্ষতা বিকাশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সিং এখন একটি বিশাল জগৎ। অর্থনীতির ভাষায়- এটিকে ট্রিলিয়ন ডলার মার্কেট বলা হয়। আমাদের নারীরা যদি এর সঙ্গে যুক্ত হয়, তা হলে তাদের যেমন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসবে, তেমনিভাবে বাংলাদেশও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে লাভবান হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে এক লাখ ৭০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেখানে সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। তাদের সবার কর্মসংস্থান করা সরকারের পক্ষে হয়তো সম্ভব হবে না। তবে সরকার তাদের জন্য সারাবিশ্বকে উন্মুক্ত করে দেবে। আউটসোর্সিংয়ের যে ট্রিলিয়ন ডলার মার্কেট রয়েছে, সেটিকে ধরতে হবে। এর ন্যূনতম অংশও যদি বাংলাদেশে আসে তা হলে দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না। কাউকে বেকার থাকতে হবে না।’

প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর জন্য প্রযুক্তি খাতে কাজের পরিবেশ তৈরি করতে চায় তার মন্ত্রণালয়। তাদের মাধ্যম করে ২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করতে চায় বাংলাদেশ।

আইসিডি প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে কোডারসট্রাস্টের কোফাউন্ডার আজিজ আহমদের প্রশংসা করে বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তথা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আইসিটি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু নিজের দেশকে ভুলে যাননি। দেশে তিনি কোডারসট্রাস্ট নিয়ে এসেছেন এবং আইসিটিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছেন।

আজিজ আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক জ্ঞান ও দক্ষতাকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা এবং সেই জনশক্তির কাজকে আবার আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাওয়াই কোডারসট্রাস্ট্রের লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও অবদান রাখা সম্ভব হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান বলেন, ‘কোডারসট্রাস্টে এসে আমি অনুপ্রাণিত বোধ করছি। এত মেয়ে দেশের জন্য একসঙ্গে কাজ করছে সেটি সত্যিই অনেক সুন্দর। একা অসম্ভবকে সম্ভব করে প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে। আমি তাদের বলব, তোমরা স্বাধীনভাবে কাজ কর ও স্বাধীনভাবে চিন্তা কর, তা হলেই আমাদের দেশের মঙ্গল হবে।’

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি পিটারসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা সারাবিশ্বে নিজের দেশকে প্রশংসিত করছে। এ দেশের সরকারও নারীর ক্ষমতায়নে অনেক তৎপর। নারীদের বলব, তোমরা সুযোগটা ধরো এবং কাজের মাধ্যমে সারা দুনিয়া জয় কর।’

সংসদ সদস্য শিরীন আহমেদ বলেন, ‘এখন মেয়েরা অনেক সামনে এগিয়ে গেছে। আমাদের সময় এত কিছু ছিল না। এখন তোমরা অনেক সুযোগ পাচ্ছ। যে যা শিখতে চাচ্ছে, তাই শিখতে পারছ। এটি ভালো। এই ভালোটা দেশের সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে করে মধ্য বয়সে গিয়ে তোমরা এই দেশকে পরিচালনা করতে পারো।’

‘ফ্রিল্যান্সিং জগতে নারীদের দক্ষতা বিকাশ’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কোডারসট্রাস্টের কোফাউন্ডার, কোডারসট্রাস্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ, বাংলাদেশি নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি পিটারসেন, বাংলাদেশ সরকারের মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান, সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন এবং জাতীয় সংসদের সদস্য শিরীন আক্তার।

উল্লেখ্য, কোডারসট্রাস্ট ডেনমার্কভিত্তিক বিখ্যাত একটি আইটি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের মধ্যে দুই লাখ মানুষকে আইটি খাতে প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিকমানের ফ্রিল্যান্সার বানানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।২০৩০ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সমান কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার একটি প্রকল্পও রয়েছে তাদের।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ এমএম