Menu

২০২৫ সালের মধ্যে প্রযুক্তি বিশ্বে যে ১০টি পরিবর্তন আসবে

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক ::বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি তাদের গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি ভিশন (জিআইভি) রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই রিপোর্টে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তিশিল্পের উন্নয়ন সম্পর্কিত কিছু মূল ধারা এবং বিষয়বস্তুর ব্যাপারে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

চলতি বছরের প্রতিবেদনে আমাদের জীবনযাপন ও কাজ করার প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে ১০টি মূলধারা (মেগাট্রেন্ড) শনাক্ত করা হয়েছে। এই ধারাগুলো শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়েছে হুয়াওয়ের নিজস্ব তথ্য ও উপাত্ত এবং বিশ্বের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তি (ইনটেলিজেন্ট টেকনোলোজি) কীভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে সেসব বাস্তব চিত্র।

এছাড়াও জিআইভি ২০২৫ সাল পর্যন্ত টেকনোলোজি ট্রেন্ডের ভবিষ্যৎবাণী প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, ফাইভজি কভারেজ, এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ডিপ্লয়মেন্ট, গৃহস্থালি রোবটের ব্যবহার এবং স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহারের হার। লিভিং উইথ বটস, সুপার সাইট, জিরো সার্চ, টেইলার্ড স্ট্রিটস, ওয়ার্কিং উইথ বটস, অগমেন্টেড ক্রিয়েটিভিটি, ফ্রিকশনলেস কমিউনিকেশন, সিম্বায়োটিক ইকোনমি, ৫জির র‌্যাপিড রোলআউট এবং গ্লোবাল ডিজিটাল গভর্নেন্স; এই বিষয়গুলোই এসেছে ২০২৫ সালের জন্য জিআইভির মূল অনুমানে ১০টি মূল ধারা হিসেবে।

পদার্থ বিজ্ঞানের অগ্রগতি, পারসেপচুয়াল এআই এবং নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি রবোটিক্সের ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করছে। ফলে বাড়িতে এবং ব্যক্তিগত পরিসরে বৃদ্ধি পাচ্ছে রবোটিক্সের বিচরণ। তাই জিআইভি ভবিষ্যৎবাণী করছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বৈশ্বিকভাবে হোম রোবটের ব্যবহার হবে ১৪ শতাংশ।

৫জি, ভিআর/এআর, মেশিন লার্নিং এবং অন্যান্য উদীয়মান প্রযুক্তির একত্রিতকরণ আমাদেরকে নিজস্ব গণ্ডির বাইরে দেখতে সাহায্য করবে। ফলে, মানুষের জন্য তৈরি হবে নতুন সুযোগ, ব্যবসা এবং সংস্কৃতি। এছাড়াও ভবিষ্যতের অনুসন্ধানগুলো হবে বাটন-ফ্রি; ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা যাবে অনায়াসেই এবং এর ফলে এই শিল্পটি জিরো সার্চ মেইনটেনেন্সের মাধ্যমে উপকৃত হবে।

এরপরে থাকছে টেইলর্ড স্ট্রিটস, যেখানে ইনটেলিজেন্ট পরিবহন ব্যবস্থা, যা যানবাহন এবং অবকাঠামোর সঙ্গে মানুষকে সংযুক্ত করবে। ফলে, থাকবে না যানজট, সম্ভব হবে জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া করা এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ড যা জীবনকে সহজতর করে তুলবে।

এখনকার তুলনায় ভবিষ্যতে রোবটের সঙ্গে কাজ করার পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে। জিআইভি ভবিষ্যদ্বাণী করে প্রতি ১০ হাজার কর্মীর জন্য শিল্পক্ষেত্রে ১০৩টি করে রোবট থাকবে। অগমেন্টেড ক্রিয়েটিভিটির জন্য জিআইভি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৯৭ শতাংশ বড় বড় সংস্থা এআই মোতায়েন করবে।

এআই এবং বিগ ডেটা অ্যানালিটিকস বিভিন্ন কোম্পানি ও তাদের গ্রাহকদের মধ্যে একটি বিরামবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করবে এবং একইসঙ্গে দূর করবে ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, ফলে নিশ্চিত হবে একটি প্রতিবন্ধকতাহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা। পৃথিবীব্যাপী বিভিন্ন কোম্পানি, একীভূত অ্যাক্সেস প্ল্যাটফর্মগুলিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এর অর্থ হচ্ছে আরও বেশি সহযোগিতা, রিসোর্স-শেয়ারিং, একটি শক্তিশালী গ্লোবাল ইকোসিস্টেম এবং বর্ধিত উৎপাদনশীলতা। এরপরে আসে ফাইভজি প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণ।

জিআইভি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার ৫৮ শতাংশ লোক ৫জি ব্যবহার করবে। এছাড়াও জিআইভি ভবিষ্যদ্বাণী করে যে বিশ্বব্যাপী বার্ষিক তথ্য আদানের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৮০ জেডবিতে (১ জেডবি = ১ ট্রিলিয়ন জিবি) পৌঁছে যাবে এবং এর জন্য প্রয়োজন হবে গ্লোবাল ডিজিটাল গভর্নেন্সের। এ ব্যাপারে হুয়াওয়ে আইসিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচারের সিএমও কেভিন ঝাং বলেন, মানুষের আবিষ্কারের নেশা কখনোই থামবে না। তাই আমাদের উচিৎ ভবিষ্যতের দিকে তাকানো এবং উদ্ভাবন থেকে বের হয়ে এসে আবিষ্কারের দিকে বেশি জোর দেয়া। বর্তমানে প্রতিটি শিল্পক্ষেত্র এআই, ৫জি, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং অন্যান্য উদীয়মান প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। এর ফলে আমরা জীবন, কাজ এবং সমাজে দ্রুত পরিবর্তন দেখছি।

তিনি বলেন, হুয়াওয়ে এমন একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা প্রতিটি ক্ষেত্রের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি ব্যক্তি, বাড়ি এবং সংস্থাকে এমন একটি বুদ্ধিমান ভবিষ্যৎ প্রদান করা যেখান থেকে তাঁরা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের নতুন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

২০১৮ সালে প্রকাশিত প্রথম প্রতিবেদনসহ, জিআইভি ২০২৫ সালকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন এটি শিল্প উন্নয়নের প্রবণতা বিশ্লেষণ করতে এবং আইসিটি প্রসারে কৌশলগত ভূমিকা রাখতে পারে। জিআইভি ২০২৫ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন এই ঠিকানায়।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২১ আগস্ট ২০১৯ / এমএম