Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানো নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে শিক্ষা বোর্ড এ আলোচনা চলছে। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর অফিস পর্যন্ত গড়িয়েছে এ আলোচনা। আলোচনার শুরু সিলেট অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা থেকে। হঠাৎ বন্যার কারণে শিক্ষা বোর্ডের ১ লাখ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী পড়েছেন বিপদে। আগামী ৩০ জুন থেকে শুরু হবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তবে বন্যার কারণে তারিখ পরিবর্তন হয়েছে সিলেটে। যেখানে ৯ জুলাই থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা আরও পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরা।

সিলেট বাদে সারা দেশে পরীক্ষার্থীর বর্তমান সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এসব শিক্ষার্থীই আলোচনায় জোর দিয়েছেন। তারা বলছেন, করোনাকালের শিখন ঘাটতি থাকায় তারা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেননি। তাই পরীক্ষা পেছানোর দাবি তাদের। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা হয় আন্তঃবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আগামী ৩০ জুন পরীক্ষার তারিখ আরও অন্তত ৬ মাস আগে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই। নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে অংশগ্রহণ করবে। তিনি বলেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতিতে উন্নতি হচ্ছে। যদি অবস্থা খারাপ মনে হয় তাহলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান বলেন, অন্যান্য বোর্ডের পরীক্ষা হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপে থাকবে। তারা চিন্তা করবে কোন বোর্ডে কেমন প্রশ্ন হচ্ছে। এতে তারা একটু বিভ্রান্তও হবে। তাই সারা দেশে একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়াটাই খুব ভালো হবে। এ সময় তিনি বছরের যে সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা কম থাকে, সেই সময় বিবেচনা করে পাবলিক পরীক্ষাগুলোর তারিখ ঘোষণার একটি ক্যালেন্ডার করার প্রতিও জোর দেন। পরীক্ষা পেছানোর দাবির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বন্যা ও ভারি বৃষ্টির কারণ দেখিয়ে সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়েছি। সারা দেশে পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। এদিকে মঙ্গলবার ভারি বৃষ্টিপাত ও দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণ উল্লেখ করে এইচএসসি সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ লাখের বেশি মানুষ। এ ছাড়া উজানি ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল। ভারিবর্ষণে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম। দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিলেট। সুরমা-কুশিয়ারাসহ এ অঞ্চলের সবকটি নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক বিভাগের সঙ্গে আরেক বিভাগের পরীক্ষা একসঙ্গে না হলে অনেকেই পিছিয়ে পড়বে এমন দাবি করে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ পাওয়ার অধিকারের কথা উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীর। তাই শুধু বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোই নয়; বরং সব বোর্ডের পরীক্ষা দুই মাস পিছিয়ে নিতে (বন্যার মৌসুমের পর পর্যন্ত) প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ জানান শিক্ষার্থীরা।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৬ জুন ২০২৪ /এমএম