বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: আইএলও ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের (ডিটিই) যৌথভাবে আয়োজিত বাংলাদেশে চাকরি ও উৎপাদনশীলতার দক্ষতা (বি-সেপ) বিষয়ক প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের কর্মসংস্থান, উৎপাদনশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখার উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল।
প্রকল্পটি আইএলও’র সহায়তায় এবং কানাডিয়ান সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বি-সেপ প্রকল্প, প্রযুক্তিগত ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করেছে।
দেশের শ্রম বাজারে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা ও সরবরাহের সঙ্গে মিল রেখে এটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পখাতের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। নারী, আদিবাসী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মতো সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও চাকরির জন্য পদক্ষেপ নিয়ে প্রকল্পটি কাজ করেছে। সমাজের সকল স্তরে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে সফল হয়েছে প্রকল্পটি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রকল্পটির নানাবিধ অর্জন উপস্থাপন করা হয়েছিল যেখানে, বাংলাদেশে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ভবিষ্যতে কীভাবে কাজ করা যায় সে বিষয়েও সরকার ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আলোচনা করেছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি দেশের দক্ষতা ব্যবস্থায় সংস্কারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আইএলও’র অবিচ্ছিন্ন সমর্থনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বি-সেপ প্রকল্প দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা”র সঠিক বাস্তবায়নে বেশকিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন, যোগ্যতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন, দক্ষতা উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব, এমপ্লয়মেন্ট সাপোর্ট সার্ভিস ও ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেল, শিক্ষানবিশি কর্মসূচী, পূর্ব অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি, এবং দক্ষতা উন্নয়নে অধিক হারে নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ।”
বাংলাদেশের কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনোয়া প্রেফান্তে বলেন, “আমরা আইএলও’র বি-সেপ প্রকল্পের সাফল্য এবং ফলাফল নিয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। নারীর প্রবেশাধিকারকে অ-প্রথাগত প্রশিক্ষণ এবং চাকরি এবং গ্রীন জবসের তৈরিতে উদ্যোক্তা বিকাশের জন্য সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আমি বিশেষভাবে প্রকল্পটির উদ্যোগ উল্লেখ করবো। কানাডিয়ান সরকার এই দুই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এবং আইএলও’র সাথে তার অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিতে আগ্রহী”।
আইএলও বাংলাদেশর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুমো পৌতিয়াইনেন বলেন, “কোন প্রকল্পের চূড়ান্ত লক্ষ্যই হলো প্রকল্পটি উত্তরাধিকার হিসেবে কিছু টেকসই মডেল রেখে যাবে আমাদের বিশ্বাস বি-সেপ তার কাজের মাধ্যমে সরকার এবং বেসরকারি খাতকে সঙ্গে রেখে তেমনটাই করে যাচ্ছে কারিগরি শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নে।”
চাকরি বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বি-সেপ প্রকল্প তরুণ সমাজের জন্য প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির ব্যবস্থার লক্ষ্যে কাজ করে গেছে। এক্ষেত্রে বাদ যায়নি নারী এবং সমাজে পিছয়ে পড়া জনগোষ্ঠীও। আর এভাবেই আইএলও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে শোভন কাজের ক্ষেত্র তৈরি কওে যাচ্ছে এবং দারিদ্র্য নিরসনে ইতিবাচক অবদান রাখছে।
প্রকল্পের অনেক অর্জনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শিক্ষানবিশি কার্যক্রম, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব, কর্মসংস্থান সহায়ক পরিবেষ, উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ প্রশিক্ষণ এবং নরী ও প্রতিবন্ধীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানে অর্ন্তভুক্তিকরণ। যা শ্রমবাজারে কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে অনুসরণ করা যেতে পারে এবং অন্যান্য দেশেও দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্পে ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৪ জুন ২০১৯/ এমএম