বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: অনলাইনে কেনা কাটা বর্তমান যুগ উপযোগী জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। দেশের লাখো মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন রকম সাইট, অ্যাপস ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অসংখ্য কেনা কাটা করছে।
তবে এই এতে উপকারের পাশাপাশি জালিয়াতির ও অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ভালো সাইট বা পেজের নকল করে জালিয়াতি করছে অনেক চক্র। সম্প্রতি সামনে আসে আরেকটি জালিয়াতির অভিযোগ।
গত ৬ জুন একটি ফেসবুক পেজ থেকে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯ প্লাস ক্লোন মোবাইল অর্ডার করে ছিলেন বগুড়ার এক ক্রেতা। যার মূল্য ছিল চার হাজার টাকা। উনি তাদের কথামত প্রথমে একশত টাকা বিকাশের মাধ্যমে অগ্রিম পরিশোধ করেন। বাকি টাকা কুরিয়ার এ পণ্য পেলেই পরিশোধ করার কথা ছিল।
অতঃপর ১১ জুন এসএ পরিবহন বগুড়া শাখা কুরিয়ার থেকে বাকি টাকা চার্জসহ পরিশোধ করেন উক্ত ব্যক্তি। কিন্তু পরিশোধের পর ফোনটির প্যাকেট খুলে দেখতে পান এটি একটি নোকিয়া ফিচার ফোন; যেটির বাজার মূল্য পাঁচ থেকে সাতশত টাকা। এরপর উক্ত পেজে বা ফোন ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওরা কোন প্রতি উত্তর প্রদান করেননি।
উল্লেখ্য কুরিয়ারে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার পরই পণ্যের প্যাকেট হস্তান্তর করা হয়েছিল। অনলাইন কেনা কাটা সচেতনতা নিয়ে কথা বললে এ ব্যাপারে অনলাইন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ডন্স টিমের বিভাগীয় প্রধান এইচ আর সোহাগ যুগান্তরকে বলেন, অনলাইনে কেনাকাটা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা ও পছন্দনীয় পণ্য সহজে হাতে পাওয়ার জন্য জনপ্রিয় একটি মাধ্যম।
তিনি বলেন, দিনদিন এর প্রসার যেমন বাড়ছে, তেমন জালিয়াতিও কম নয়। তবে নিন্মোক্ত বিষয়গুলোতে ক্রেতাদের নজর দেয়া উচিত। এতে করে অনেকটাই হ্রাস পাবে এই জালিয়াতি। প্রতারিত হলে কি করণীয় কী-
অনলাইন কেনা কাটায় প্রতারিত হলে প্রথমে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তী সময়ে পণ্য কেনা বা হাতে পাওয়ার তারিখ হতে ত্রিশ দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়েও মোকদ্দমা দায়ের করা যায় আদালতে। প্রতারণা মামলাও করা যেতে পারে। কিন্তু ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করাটা সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ।
অধিদপ্তর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জরিমানা প্রদানের আদেশ দেবে। এ জরিমানা হিসেবে যে টাকা আদায় করা হবে তার ২৫ শতাংশ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে দেওয়া হবে।
৯৯৯ এ ও কল করেও সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরী সে সম্পর্কে এইচ আর সোহাগ আরও বলেন, অনলাইনে কোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে সচেতনতাই প্রথম শর্ত। তবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোও মেনে চলতে হবে।
১. কম দামে লোভনীয় অফার এড়িয়ে চলুন।
২. প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৩. প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা যাচাই করুন।
৪. বিকাশ নাম্বারে পেমেন্ট করলে অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে।
৫.কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে রশিদ ও ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পণ্য গ্রহণ করা অনেকটাই নিরাপদ ।
৬. ফেসবুকে কেনাকাটা করতে হলে অবশ্যই গ্রুপ বা পেজের পাব্লিক রিভিউ দেখে নিতে হবে।
৭. বিশ্বাসযোগ্য পেজ গ্রুপ গুলি থেকে অর্ডার করুন। পর্যবেক্ষণ করুন।
৮.পণ্য হাতে পাওয়ার পর মূল্য পরিশোধ করা যায় এমন গ্রুপ পেইজ থেকে কেনা কাটা নিরাপদ। যা অনেকেই নিজস্ব রাইডার দিয়ে করে থাকে।
৯. সকল রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১২ জুন ২০১৯/ এমএম