বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ানের এক প্রতিবেদনে এমনই আভাস দেয়া হয়েছে। খবর ডেইলি সাবাহর।
আগামী দুবছরে অন্তত পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে পারে মিয়ানমার সরকার। আসিয়ানের ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট টিমের (আসিয়ান-ইএআরটি) ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ফলে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের বেশ কিছু পুলিশ ও সেনা চেকপোস্টে হামলার ঘটনা কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।
অভিযানের নামে রোহিঙ্গা নারীদের গণধর্ষণ, নির্বিচারে গুলি করে হত্যা এবং তাদের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সেনাবাহিনীর বর্বর অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘের বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা উঠে এসেছে।
এ ঘটনাকে জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করারও আহ্বান জানিয়ে আসছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। কিন্তু পরে এ বিষয়ে মিয়ানমারের আর কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
এ ছাড়া এখানকার রোহিঙ্গারাও আতঙ্কের কারণে মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না। সেখানে আবারও আগের মতো পরিস্থিতি হতে পারে বলে এখনও তাদের মধ্যে শঙ্কা রয়ে গেছে।
প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার বিষয়ে কাজ চলছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ওই প্রতিবেদনে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উল্লেখ না করে তাদের ‘মুসলিম’ সম্প্রদায় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের এক প্রতিবেদনে প্রত্যাশা করা হয় যে, পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিগগিরই মিয়ানমারে ফিরে যাবে।
অথচ রাখাইন রাজ্যে চলমান গৃহযুদ্ধ, সেখানে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর অত্যাচার; এমনকি অত্যাচারিত মুসলিম সংখ্যালঘুদের নামও উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনটিতে।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০৯ জুন ২০১৯/ এমএম