Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন করেছে। গত কয়েকদিন ধরে প্রস্তুতি চললেও ২৫ ডিসেম্বর বুধবার যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন অর্থাৎ বড়দিনে তারা আনন্দে মেতে ওঠেন। তাদের বড়দিন উদযাপনের এই উৎসবে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির আবহ।

নিউইয়র্কের উডসাইডের খ্রিস্ট লুথারেন চার্চে প্রতিবছর বড়দিন উপলক্ষে যৌথভাবে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইউনাইটেড লুথারেন চার্চ অব আমেরিকা এবং ওজোনপার্ক ইভানজেলিক্যাল লুথারেন চার্চ , ব্রুকলিন। এসব অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল প্রার্থনা এবং পরে ছিল কেক কাটা, শিশুদের মাঝে সান্তা ক্লজের চকোলেট বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আরো ছিল বাঙালি সংস্কৃতির আবহে পিঠা আপ্যায়ন।

বড়দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাউন্সিলর আয়েশা হক। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান।অনুষ্ঠানে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এসময় ইউনাইটেড লুথারেন চার্চ অব আমেরিকার উপদেষ্টা ডা. টমাস দুলু রায়, সিনিয়র যাজক জেমস রায়, সেক্রেটারি এ. মানিক, কমল দে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের গ্রামবাংলার পিঠা দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করা হয়।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষে নিউইয়র্ক শহর পরিণত হয় উৎসব নগরীতে। বিশ্বের রাজধানী হিসাবে পরিচিত নিউইয়র্কের ম্যানহাটসহ সর্বত্র ছিল কেবল বর্ণিল আলোকসজ্জা। নিউইয়র্কের বিখ্যাত রকফেলার সেন্টারে ক্রিসমাস ট্রি উন্মুক্ত করা হয়। ৭৫ ফুট দীর্ঘ বৃক্ষটি ৪৫ হাজার নানা রঙের বাতি দিয়ে সাজানো হয়। ১৯৩১ সাল থেকে প্রতি বছর বড়দিনে নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়। উৎসবের আনন্দে শামিল হতে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অসংখ্য পর্যটক বেড়াতে যান। মাসব্যাপী বাসা বাড়িতে আলোক সজ্জা, গির্জাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শপিং মল ও বাসাবাড়িতে ‘ক্রিসমাস ট্রি’ স্থাপন, রঙিন বল, জড়ি, ক্যান্ডিসহ নানা উপকরণে ক্রিসমাস ট্রি সজ্জা, প্রীতিভোজ, খ্রিস্টমাস কেক কাটার আনন্দের মধ্য দিয়ে উৎসবের সামাজিক পর্বটি সমাপ্তি হয়।

নিউইয়র্কের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সুখেন জোসেফ গোমেজ সাংবাদিকদের বলেন, নিউইয়র্কে আমরা সাউথ এশিয়ান রিজিওনে একটা কমিউনিটি তৈরি করেছি। আমাদের সংস্কৃতিতে অনেকটাই মিল রয়েছে। আমরা সম্মিলিতভাবে ক্রিসমাস উদযাপন করছি। তবে অবশ্যই বাংলাদেশকে আমরা মিস করছি। ফিনান্সিশিয়াল এনালিস্ট ডেনিস রোজারিও বলেন, ‘দেশের ক্রিসমাস অবশ্যই মিস করি। বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিসমাস ভিন্ন রকম। তবে এখানে যে ধরনের লাইটিং, মানুষের মধ্যে স্পিরিটটা নিয়ে আসে তা দেখে মনটা ভরে যায়।’

নিউইয়র্কের একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ সিমি ডি কস্টা বলেন, দেশে আমরা সব আত্মীয়-স্বজনরা মিলে বড়দিন উদযাপন করতাম। এখানেও তেমনি আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবরা এক সঙ্গে হচ্ছি। এ সময় আমরা পিঠা বানাই, পিঠা খাই। এছাড়াও আমরা এমন কিছু খাবার-দাবারের আয়োজন করি যা ক্রিসমাস ছাড়া হয়তো অন্য কোনো সময় করা হয় না।

বড়দিন উপলক্ষে বিভিন্ন বাসা বাড়িও বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। নিউইয়র্কের বিভিন্ন চার্চে বাংলাদেশিদের বড়দিনের আয়োজনে ছিল বাংলা গান, নাচ, সঙ্গে বাঙালি খ্রিস্টানদের ঐতিহ্যবাহী কীর্তন। আর এসব আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন শিশু, নারীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ /এমএম


Array

এই বিভাগের আরও সংবাদ