প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: কোলেস্টেরলকে সাধারণত ক্ষতিকর ভাবা হলেও, বাস্তবে শরীরের হরমোন তৈরিতে এবং কোষ গঠনে এটি অপরিহার্য। তবে এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা রক্তনালিতে প্লাক তৈরি করে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, প্রতি বছর প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন মানুষ উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে মারা যায়।অনেকে মনে করেন শুধু জিনগত কারণ বা বড় ধরনের জীবনধারার পরিবর্তনেই কোলেস্টেরল বাড়ে, কিন্তু রান্নাঘরে প্রতিদিনের কয়েকটি ভুল অভ্যাস নিঃশব্দেই এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হেলথ শটসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সেই ভুলগুলোর তালিকা।
রান্নাঘরের ৭টি সাধারণ ভুল, যা কোলেস্টেরল বাড়ায়
১. অতিরিক্ত তেল বা মাখন ব্যবহার
রান্নায় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তেল দিলে ক্যালোরি বাড়ে এবং এলডিএল কোলেস্টেরলও বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে মাখন ও ঘিতে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে। তাই বোতল থেকে সরাসরি তেল ঢালার বদলে মেপে ব্যবহার করুন এবং অলিভ অয়েল, ক্যানোলা বা অ্যাভোকাডো অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর তেল বেছে নিন।
২. ভাজাপোড়া বেশি খাওয়া
ডিপ-ফ্রাইড খাবার উচ্চ তাপে ভাজার ফলে ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। পুষ্টিবিদ বিদ্ধি চাওলা জানান, মাঝে মাঝে ভাজাপোড়া খেলেও লিপিড লেভেলে প্রভাব পড়ে। তাই বিকল্প হিসেবে বেকিং, গ্রিলিং বা এয়ার-ফ্রাইং পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
৩. ফাইবারযুক্ত খাবার কম খাওয়া
ফাইবার শুধু হজম ভালো রাখে না, বরং এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। মায়ো ক্লিনিক জানায়, সলিউবল ফাইবার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের শোষণ কমায়। ওটস, বিনস, ব্রাসেলস স্প্রাউট, আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি নিয়মিত খেলে হার্ট ভালো থাকে। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ১০ গ্রাম অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণ করলে হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি ১৭% কমে।
৪. লবণ ও চিনি বেশি খাওয়া
অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়ায় এবং অতিরিক্ত চিনি ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ায়—দুটিই হৃদরোগের ঝুঁকির সঙ্গে জড়িত। হার্ভার্ড হেলথের তথ্যমতে, রুটি, স্যুপ, সস, সালাদ ড্রেসিংয়ের মতো অনেক খাবারে থাকে লুকানো চিনি। তাই লেবেল দেখে কম সোডিয়াম ও চিনি-মুক্ত পণ্য বেছে নিতে হবে।
৫. তেলে ভেজা খাবার বারবার গরম করা
তেলে ভেজা খাবার পুনরায় গরম করলে অক্সিডাইজড ফ্যাট তৈরি হয়, যা রক্তনালির ক্ষতি করে। একই তেল বারবার ব্যবহার করলেও তা বিষাক্ত হয়ে ওঠে। তাই খাবার কাচ বা স্টিলের পাত্রে সংরক্ষণ করুন এবং পুরোনো তেল দিয়ে রান্না না করুন।
৬. পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ না করা
স্বাস্থ্যকর খাবারও অতিরিক্ত খেলে কোলেস্টারল ও ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়তে পারে। ঘরে খাওয়ার সময় অনেকেই না বুঝে বেশি খেয়ে ফেলেন। ছোট প্লেট ব্যবহার, কম পরিবেশন এবং সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস এই সমস্যা কমায়।
৭. রেডিমেড সস ও সালাদ ড্রেসিংয়ের ওপর নির্ভরতা
রঙিন বোতলের সস ও ড্রেসিংয়ে থাকে বেশি চিনি, লবণ ও আনহেলদি ফ্যাট। এগুলো নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড উভয়ই বাড়তে পারে। তাই বাড়িতে দই, অলিভ ওয়েল, লেবুর রস ও হার্বস দিয়ে নিজস্ব ড্রেসিং তৈরি করা উত্তম।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৬ নভেম্বর ২০২৫ /এমএম





