প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: বিষম খাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা, তবে কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক। ডাক্তারি ভাষায় এটিকে চোকিং বলে। প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ গলায় খাবার আটকে বা অন্যভাবে শ্বাস আটকে ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়েন। নির্দিষ্ট কোনো বয়সও নেই—৫ থেকে ৬৫ সব বয়সের মানুষদের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে বিষমের শিকার হয়।শুকনো খাবার গলায় আটকে যেতে পারে, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এক সঙ্গে অনেকটা খাবার খাওয়া ও খাওয়ার সময় কথা বলার ব্যাপারেও সাবধানতা মেনে চলা উচিত।
কখন সাবধান হবেন
বাচ্চা হোক বা বয়স্ক মানুষ—গলায় কিছু আটকে গেলে কয়েকটা লক্ষণ দেখলে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। এখানে সময়ের দাম অনেক বেশি। সময় নষ্ট করলে জীবন দিয়ে তার দাম শোধাতে হতে পারে। শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে প্রথমেই মানুষটির নিঃশ্বাসের কষ্ট হবে। এর জন্যে কাশি হবে, বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ, বমি বা বমি বমি ভাব, কথা বলতে না পারা, এমনকি বা অক্সিজেন ইনটেক একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে রোগীর ঠোঁট নীল হয়ে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ৭-১২ মিনিটের মধ্যে চিকিৎসা শুরু না করলে রোগীকে বাঁচানো মুশকিল।
কাদের ঝুঁকি বেশি
খাওয়ার সময় বিষম খেলেই যে দম আটকে যায় তা নয়, কিছু কিছু অসুখ থাকলে সাবধান হওয়া উচিত। অ্যাজমা, সেরিব্রাল পলসি, স্ট্রোক, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, নার্ভের অসুখ, ইসোফেগাস বা খাদ্যনালীর টিউমার, পার্কিনসনস ডিজিজ, মাসকিউলার ডিস্ট্রফি, মস্তিষ্কে চোট আঘাত, কাঁপুনি ও জ্বর, এপিলেপ্সি, খাবার গিলে খাওয়ার অসুবিধে ইত্যাদি সমস্যা থাকলে খাওয়ার সময় সতর্ক থাকা দরকার। অবশ্য সাধারণ মানুষেরও তাড়াহুড়া করে খাবার খেতে গেলে বিষম খেয়ে বা গলায় খাবার আটকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কী করতে হবে
আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে রোগীকে কাশতে বলুন। একই সময়ে পিঠে চাপড় মেরে গলায় আটকানো খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু এতেও সমস্যা না কমলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পিঠে চাপড় মারার পাশাপাশি পাঁজরের ঠিক তলায় চাপড় মারলেও শ্বাসনালীতে আটকে থাকা খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসে। পেট ও পাঁজরের সংযোগস্থলে (এপিগ্যাসট্রিয়াম) দুইহাতে মোচড় দেওয়ার মতো জোরে ধাক্কা দিলে আটকানো খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসে। তবে প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক্যাল স্টাফেরা এই কাজ করতে পারেন।
সতর্কতা
বিষম বা চোকিংয়ের সমস্যায় সতর্ক থাকা আবশ্যক। খাবার খাওয়ার সময় সঙ্গে পানি রাখতে হবে। শুধু শুকনা খাবার কখনোই খাওয়া যাবে না। খেলেও সঙ্গে পানির বিষয়টি নিশ্চিত করা উচিত। একসঙ্গে মুখে বেশি খাবার দেয়া এবং খাবারের সময় কথা বলাও উচিত নয়। এছাড়া এ ধরনের সময় নিজেরা কিছু করতে না পারলে তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া উচিত।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০৭ মে ২০২৫ /এমএম